মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
রেজাউল করিম রেজা : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন হালুয়াটের কৃতি সন্তান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল হক মন্ডল। হালুয়াঘাটের মোজাখালী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ভূ-স্বামী পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা আকরাম হোসেন মন্ডল ও চাচা কুদরত উল্লাহ মন্ডল ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। চাচা কুদরত উল্লাহ মন্ডলকে ‘সীমান্তবন্ধু’ বলা হতো। ১৯৭০ এর নির্বাচনে কুদরত উল্লাহ মন্ডল প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের পর কুদরত মন্ডল হালুয়াঘাটে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে সংগ্রাম চালিয়ে যান। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য হালুয়াঘাট সীমান্তে মানুষের ঢল বাড়তে থাকলে কুদরত মন্ডল মেঘালয় রাজ্যের গাছুয়াপাড়ায় ‘ইয়ুথ ক্যাম্প’ স্থাপন করেন এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে পরিচালনা করতে থাকেন। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
নাজমুল হক মন্ডলের বাবা আকরাম হোসেন মন্ডল হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। কুদরত মন্ডলের নেতৃত্বে গঠিত সংগ্রাম পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক লীগের হালুয়াঘাট থানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা উত্তর সময়েও তিনি ৩ মেয়াদে ১৮ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন। বাবা-চাচার ন্যায় নাজমুল হক মন্ডলও ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। স্কুল জীবনে বিড়ইডাকুনী উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি ও সভাপতি, ১৯৮৪ সালে হালুয়াঘাট থানা শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি, ১৯৮৬ সালে সভাপতি, পরে ময়মনসিংহ জেলা শাখা ছাত্রলীগের সদস্য হন। ১৯৮৭ সালে হালুয়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ২০০৩ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, পরে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং সর্বশেষ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হন। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান তার মনোনয়ন প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ভাবনা সম্পর্কে। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
প্রতিদিনের কাগজ : ময়মনসিংহ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা ও স্বপ্ন কি?
নাজমুল হক মন্ডল : আমাদের হালুয়াঘাটে যে দু’টা স্থলবন্দর রয়েছে, বর্তমান সরকারের মাধ্যমে তা কার্যকর করে আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে ময়মনসিংহের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হোউক, এটা আমরা চাই।
প্রতিদিনের কাগজ : আওয়ামী লীগ থেকে আপনাকে কেন মনোনয়ন দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?
নাজমুল হক মন্ডল : আমার বাবা-চাচা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছিলেন। দু’জনই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। আমিও পারিবারিকভাবেই ছাত্র বয়স থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাই আমি মনে করি- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি যোগ্য মনে করেন এই দিক থেকে আমি মনোনয়ন পাওয়া যোগ্য।
প্রতিদিনের কাগজ : আপনি নির্বাচিত হলে হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ায় কি কি কাজ করবেন?
নাজমুল হক মন্ডল : আমি যদি নির্বাচিত হয় হালুয়াঘাট-ধোবাউড়ায় যেসব উন্নয়ন কাজ হয়নি, তা সম্পন্ন করবো। বাংলাদেশ যেভাবে আগাচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।
প্রতিদিনের কাগজ : নির্বাচিত হলে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে আপনার ভূমিকা কি থাকবে??
নাজমুল হক মন্ডল : আমার বাবা-চাচা যখন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, কোনো অন্যায় বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেননি। আমিও একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চাই, যেখানে মানুষ তার অধিকার নিয়ে সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।
প্রতিদিনের কাগজ : মাদক নির্মূলে আপনার ভূমিকা কি থাকবে?
নাজমুল হক মন্ডল : আমার মূল লক্ষ্য যুব সমাজ। যুব সমাজকে রক্ষা করতে হবে। যুব সমাজকে রক্ষার করতে হালুয়াঘাট-ধোবাউড়ায় মাদক নির্মূলে আমার ভূমিকা শতভাগ থাকবে।
প্রতিদিনের কাগজ : আপনার এলাকার ভোটাররা আপনাকে চাই কি না? ভোটারদের প্রত্যাশা কি বলে মনে করেন?
নাজমুল হক মন্ডল : আমি মনে করি, হালুয়াঘাট মন্ডল বাড়ী থেকে কেউ প্রার্থী হলে আবার সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে। মানুষ মন্ডলবাড়ীর প্রার্থীকেই ভোট দিবে, ব্যক্তি নাজমুল মন্ডলকে না।
প্রতিদিনের কাগজ : মানুষ কেন আপনাকে চাইবে?
নাজমুল হক মন্ডল : আমার বাবা-চাচা অর্থাৎ আমার পরিবার সম্পর্কে মানুষ জানে। আমাদের পরিবার সবসময় মানুষের পাশে ছিলো। মানুষ আমার বাবা-চাচাকে স্বতঃস্পূর্তভাবে নির্বাচিত করেছে। তাই সেই বাস্তবতা থেকে মানুষ আমাকেও নির্বাচিত করবে বলে মনে করি।
প্রতিদিনের কাগজ : রাজনীতি করতে গিয়ে আপনি বা আপনার পরিবার কোনো হামলা-মামলা বা নির্যাতনের শিকার হয়েছে কি না??
নাজমুল হক মন্ডল : হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে আমার বাবা ও আমার দুই ভাই কারাবরণ করতে হয়েছিলো।
প্রতিদিনের কাগজ : সামাজিক কর্মকান্ডে আমার অংশগ্রহণ রয়েছে কি না?
নাজমুল হক মন্ডল : সামাজিক কর্মকান্ডে আমার শতভাগ অংশগ্রহণ রয়েছে। যেকোন সময় মানুষের বিপদে পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করি। কেউ চিকিৎসার সমস্যায় ভূগলে তাকে সহায়তা করি। মন্ডলবাড়ীর দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।
প্রতিদিনের কাগজ : দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু আশাবাদী??
নাজমুল হক মন্ডল : আমি আশাবাদী হালুয়াঘাট-ধোবাউড়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আমি পাবো।
প্রতিদিনের কাগজ : মনোনয়ন পেলে জয়ের ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
নাজমুল হক মন্ডল : আমরা নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বড় হয়েছি। হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া মানুষে আমাদের পরিবারকে ভালোবাসেন। প্রার্থী হলে মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রতিদিনের কাগজ : দলীয় মনোনয়ন না পেলে আপনার ভূমিকা কি থাকবে?
নাজমুল হক মন্ডল : দলীয় মনোনয়ন না পেলে দেশরত্ন শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেন, তাকে নির্বাচিত করতে কাজ করবো।