শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

আপডেট
খেলাধুলাই পারে যুবসমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে- হাজী জসিম উদ্দিন  মিরসরাইয়ে ৩৫তম উদয়ন মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৫০০ শিক্ষার্থী সহায় সম্বল হারিয়ে দিশেহারা গোশত ব্যবসায়ী রফিক ; দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মহিষের আশায় ভালো নেই বাঁশ ও বেতশিল্পের কারিগররা আমাগো আব্বু আর আইবো না, গুল্লি কইররা মাইররা ফালাইসে এমপি বাবুর বাড়ি গাড়ি অঢেল সম্পদ যুবলীগ নেতার বাড়ি থেকে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার কক্সবাজারে গভীর রাতে মাকে হত্যা করে থানায় হাজির ছেলে সংস্কারের আগে নির্বাচন করলে কখনোই সংস্কার হবে না: সংস্কার কমিশন সদস্য তোফায়েল আহমেদ জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: রিজভী
দাম বৃদ্ধিতে আপেল, কমলা, মাল্টা,আঙুর ধনীদের ফলে পরিণত

দাম বৃদ্ধিতে আপেল, কমলা, মাল্টা,আঙুর ধনীদের ফলে পরিণত

দাম বৃদ্ধিতে আপেল, কমলা, মাল্টা,আঙুর ধনীদের ফলে পরিণত

আবুল হাসনাত মিনহাজ, চট্টগ্রাম : আপেল কমলা আঙুর এখন সাধারণের নাগালের বাইরে বছরের ব্যবধানে দাম বেড়ে দ্বিগুণ,চট্টগ্রাম নগরের কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ফলের বাজারগুলোয় প্রতি কেজি মাল্টা ৩৬০, কমলা ৩৫০, আপেল ২৫০-২৭০ ও ডালিম ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

অথচ গত জুন মাসের শুরুতে প্রতি কেজি কমলা ছিল ১৫০ টাকা, মাল্টা ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া ডালিম ও আপেলের দাম মানভেদে বেড়েছে ৮০ টাকার বেশি। গতকাল ভ্যানে প্রতিটি ডাব বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ১২০ টাকায়। অথচ জুন মাসে দেশি এ ফলের প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে বিদেশি ফলের বাজার। ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি কারণে আপেল, কমলা, মাল্টা ও আঙুর এখন কেবল ধনীদের ফলে পরিণত হয়েছে। সাধারণ ক্রেতারা উচ্চ দামে এসব ফল কিনতে পারছেন না।

গত এক বছরের ব্যবধানে আপেল, কমলা মাল্টাসহ প্রায় সব ফলের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। ডলার সংকটের কারণে বিদেশি ফল আমদানিতে আগের ৩ শতাংশের সাথে নতুন করে আরো ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে সরকার। এরপর থেকে ফলের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়ে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধুমাত্র ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বাড়ানোকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা আমদানির মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে ফল বিক্রি করছেন বিষয়টি সরকারের কোনো দায়িত্বশীল সংস্থা নজরদারি করছে না। তাই ফলের বাজারে অরাজকতা দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের হিলভিই আবাসিক এলাকার বাসিন্দা রফিক উদ্দিন দৈনিক প্রতিদিনরে কাগজকে বলনে ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম । চিকিৎসক আমাকে কিছু ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী গতকাল সকালে বাজারে এসেছিলাম ফল কিনতে। তবে ফলের দাম শুনে অবাক করার মত,বছরের ব্যবধানে দাম বেড়ে দ্বিগুণ দাম শুনে না কিনে বাসায় চলে আসি। চকবাজাররে রাসলে আহমদ দৈনিক প্রতিদিনরে কাগজকে বলেন, বেশককিছুদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলাম,এখন জ্বর কিছুটা কমলেও শারীরিক দুর্বলতা এখনো রয়েেেছ।

চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন প্রচুর পরিমাণে ফলের রস খেতে। তাই মাল্টা কিনতে এসেছিলাম বাজারে। কিন্তু এক মাস আগেও যে মালটা ২৮০ টাকায় কিনেছিলাম, আজ কিনতে হলো ৩৫০ টাকা কেজি দরে। চকবাজারে খুচরা ফল বিক্রেতা মোহাম্মদ হাবিব দৈনিক প্রতিদিনরে কাগজকে বলেন, পাইকারি বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ফলের বাজার চাঙা রয়েছে। আমদানিকারকরা আমাদের জানিয়েছেন, সরকার ভ্যাট–ট্যাঙ বাড়িয়েছে, তাই আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। আমরা পাইকারি থেকে অল্প অল্প ফল এনে বিক্রি করি। আবার পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কেনার পর দেখা যাচ্ছে অনেক ফল পচা কিংবা মান খারাপ। তখন সেগুলো বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়।

চট্টগ্রাম নগরীর ফলমন্ডিতে ফলের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি কমলা ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, আপেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, ডালিম ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা, আঙুর ২৮০ থেকে ৩৪০ টাকা এবং নাসপতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারে কোনো কোনো ফলের দামের পার্থক্য কেজিতে সর্বোচ্চ ৮০থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। ফলমন্ডির ব্যবসায়ী আলি হায়দার দৈনিক প্রতিদিনরে কাগজকে বলেন, এক সময় ১০ শতাংশ মার্জিনে ব্যাংকে এলসি (ঋণপত্র) খুলে ফল আমদানি করা যেত। এখন শতভাগ মার্জিন দেয়ার পরেও অনেক ব্যাংক ডলার সংকটের কথা বলে এলসি দিচ্ছে না।

এছাড়া ফল পচনশীল পণ্য। সঠিক সময়ে খালাস করতে না পারলে গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। তখন আর দাম পাওয়া যায় না। তাই অনেক ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়ে আমদানি করছেন না। এতে বাজারে সরবরাহেরও সংকট রয়েছে। তাই বাজার চড়া। ফলমন্ডির ব্যবসায়ীরা বলেন বিদেশী ফল আমদানিতে শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক দিতে হচ্ছে ২৩ শতাংশ। এছাড়া ২৫ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ৪ শতাংশ অগ্রিম ভ্যাট দিতে হচ্ছে। তাই আমদানি ব্যয়ও বেড়ে গেছে।

আমাদের দেশে মৌসুমভেদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আপেল–মাল্টার মতো বিদেশী ফল আমদানি হতো। বিশেষ করে আপেল আমদানি হতো চীন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। তবে আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ভারত থেকে আপেল আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া মাল্টা আসতো মিসর ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। বাজারে এখন রয়েছে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার মাল্টা। এছাড়া আঙুর ও ডালিম চীন ও মিসর থেকে আসতো। তবে বাজারে এখন ভারতীয় ডালিম ও আঙুরের আধিক্য রয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |