আনিছুর রহমান রুবেল
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় করলেন সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম গত রবিবার রাতে সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এ মতবিনিময় সভা করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন ইছাপুরা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোবারক ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহন মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান শেখ সহ আরো আনেকে। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা তার জীবনের একটি গল্প তুলে ধরেন,
চেতনায় মুগ্ধ আমি আমরা সেই বাঙালিঃ
দেশপ্রেম, দেশাত্মবোধ ও সততার মূর্ত প্রতীক বাঙালি পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জি। আমি (মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইছাপুরা) মো:গোলাম মাওলা (৭৩)পিতা মৃত আব্দুল মান্নান সাং পশ্চিম রাজদিয়া সিরাজদিখান।
আমি আমার সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করি দুই নম্বর সেক্টর মুন্সিগঞ্জ সাব ডিভিশন বিক্রমপুর পরগনায়। বাঙালি জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের লক্ষ্যে আমি সহ প্রায় ১২০০ কিশোর বাঙালি ইন্ডিয়ান আর্মি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণের জন্য যাই ৭১ এর আগস্টে।ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জি তার দেশপ্রেমের কথা মনে করে জিজ্ঞেস করেন এখানে বিক্রমপুরে কারা আছো। আমরা ৪২ জন হাত তুলি এবং ট্রেনিং কালীন সময়ে তাহার আন্তরিকতা, সহযোগিতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হই এবং তার নির্দেশনায় পরবর্তীতে দেশে ফিরে যুদ্ধ ঝাপিয়ে পড়ে পরাধীন দেশকে স্বাধীন করি। তারপর ১৯৭২ সালে স্বাধীন দেশে সেই বাঙালিই ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেন চ্যাটার্জির সাথে দেখা হয় নিউমার্কেটে । তাকে আমরা কয়েক মুক্তিযুদ্ধা মিলে চাঁদা তুলে ১৫০০ টাকায় মেড ইন জাপানি কেসিও ঘড়ি উপহার দেবার চেষ্টা করি। তিনি বিস্ময়ে এক পলকে তাকিয়ে থাকেন ঘড়িটির দিকে,হঠাৎ চ্যাটার্জি হুংকার মেরে বলেন কেন আমি জাপানি তৈরি ঘড়ি পড়বো। তাছাড়া এই ঘড়ি পড়ে আমার বাসায় গেলে আমি আমার স্ত্রী ও পরিবার এবং প্রতিবেশীদের কাছে কি জবাব দেব। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা হতবাক বিস্মিত ও লজ্জিত তার এই দেশপ্রেম দেখে। পরবর্তীতে ১৪০০ টাকায় ঘড়িটি ফেরত দেই দোকানে ১০০টাকা লস দিয়ে।
তখন মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি গর্বিত আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি গর্বিত আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন মানবিক সদস্য।