শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

আপডেট
কক্সবাজার অবরোধের কারণে পর্যটন শিল্পে ধস

কক্সবাজার অবরোধের কারণে পর্যটন শিল্পে ধস

ধস

মনসুর আলম মুন্না,, কক্সবাজার : বিএনপি ও সমমনা দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে। এর আগে ডাকা হরতাল ও অবরোধে পর্যটন খাতে প্রায় ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি পর্যটন ব্যবসায়ীদের। নতুন করে আবারো অবরোধ শুরু হওয়ায় পর্যটক কমেছে। গত শনিবার থেকে কক্সবাজার ত্যাগ করেছে অধিকাংশ পর্যটক। অনেকেই বাতিল করেছে অগ্রিম রুম বুকিং।
গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দেখা গেছে, সৈকতজুড়ে সুনসান নীরবতা। খালি পড়ে আছে কিটকট চেয়ারগুলো। অলস সময় পার করছেন ফটোগ্রাফার, জেডস্কি ও ঘোড়া চালকরা। ক্রেতা নেই চটপটি, ফুসকা ও অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোয়। ফুসকা বিক্রেতা আমান উল্লাহ বলেন, ‘সকাল থেকে বসে আছি, বিক্রি নেই। গুটিকয়েক স্থানীয় মানুষই এখন প্রধান ক্রেতা।’ঘোড়াচালক শাহীন বলেন, ‘মালিককে দৈনিক ১ হাজার টাকা ঘোড়ার ভাড়া বাবদ দিতে হয়। এখন পর্যন্ত ২০০ টাকাও রোজগার হয়নি। বেলা শেষে কীভাবে মালিককে টাকা দিব সেই চিন্তায় আছি।
সি সেইফ লাইফ গার্ডের সদস্য ওসমান বলেন, ‘সৈকতের ১০-১২ পয়েন্টে লাইফ গার্ডের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু পর্যটক না থাকায় দায়িত্ব কমে এসেছে। অনেকেই ফুটবল খেলে সময় পার করছেন।’ এদিকে হরতাল-অবরোধে কক্সবাজারবিমুখ হয়েছে পর্যটকরা। হোটেলে রুম বুকিং থাকলেও তা বাতিল করেছে পর্যটকরা। এতে চিন্তায় পড়েছেন হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকরা। কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, ‘এখানকার প্রায় রেস্তোরাঁ পর্যটক ঘিরে জমজমাট থাকে। কিন্তু অবরোধে পর্যটক-খরায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা চাই কক্সবাজার হরতাল-অবরোধমুক্ত থাক। না হয় ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিয়ে বিকল্প পথ বেছে নিতে হবে।’
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘কক্সবাজারের পর্যটন খাত অর্থনীতির ভিত মজবুত করে। কভিডের সময় অনেক ব্যবসায়ী পথে বসেছেন। পরিস্থিতি এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু হরতাল ও অবরোধ ঘিরে পর্যটনে ফের অশনি সংকেত বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে সবাইকে ভাবা উচিত। অবরোধ ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশের পাশাপাশি শহরজুড়ে বিজিবি ও র‌্যাবের একাধিক টিম টহল দিচ্ছে।কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের জানমাল রক্ষায় সতর্ক রয়েছে পুলিশ। সড়কে বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। শুধু সমুদ্র সৈকত নয়, পর্যটকের খরার এ দৃশ্য প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, ইনানীর পাথুরে সৈকত, হিমছড়ি ঝরনা, শহরের বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, রামু বৌদ্ধ বিহার এবং ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ কক্সবাজারের সবকটি বিনোদন কেন্দ্রে অবরোধের প্রভাব পড়েছে বলে দাবি পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |