শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

আপডেট
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বাজারের ঢাক নিয়ে দু’পক্ষের সংর্ঘষ ॥ আহত-৩০

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বাজারের ঢাক নিয়ে দু’পক্ষের সংর্ঘষ ॥ আহত-৩০

হানিফ উল্লাহ আকাশ, বিশেষ প্রতিবেদক : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার দুটি উল্লেখযোগ্য বাজারের ইজারা (খাস কালেকশান  ডাক) দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এমপি সমর্থিত গ্রুপ ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত্য ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুরুত কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও বাকিদের কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

পুলিশ,উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২২ শে জুন) দুপুরে পূর্ব বাজার কলেজ মোড়ে বাজার ডাক নিয়ে আ’লীগের দু’পক্ষ চয়ন গ্রুপ এবং স্থানীয় এমপি সমর্থিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বাবুল  এর ছোট ভাই আব্দুল ওয়াদুদ রতন গ্রুপের মধ্যে প্রথমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মত ঘটনা ঘটে। পরে দু’পক্ষের লোকজন স্বজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে এসময় উভয় পক্ষের অন্তত্য ৩০ জনের মত আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ফজলে হাসান রাব্বি, লিটন মিয়া, শিপন  মিয়া, মজিবর রহমানকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করে কলমাকান্দা জরুরি বিভাগের কর্ত্যরত চিকিৎসক। অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন, অমিত শাহ, রাসেল খানসহ অনেকেই গুরুতর অবস্থায় কলমাকান্দা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
থেমে থেমে র্দীঘক্ষণ সংর্ঘষ চলার পর, ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনো সারা বাজার থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। লাঠিসুঠা হাতে এমপি ও চেয়ারম্যান গ্রুপের নেতাকর্মীরা বাজারের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মহড়া দিচ্ছে ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা চয়ন গ্রুপের লোকজনকে  হুমকি ও মারধর করছে।
সংঘর্ষে আহত স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন বলেন, এমপি সাহেব দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সব চেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ কলমাকান্দা বাজার ও নাজিরপুর বাজার খাস কালেকশনের নামে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উনার নিজেদের লোকদের দেয়। ফলে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে ঠিত তেমনি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আজ সকালে উন্মক্ত ডাক দেয়ার কথা থাকলে আমরা ডাকে অংশ নিতে গেলে এমপির সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুষ বাবুলের ভাই আব্দুল ওয়াদুদ রতন গ্রুপ আমি সহ স্থানীয় লোকজনের উপর হামলাচালায়, এ সময় অন্ত্যত৩০ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুস বাবুল এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানা অফিসার ইনচার্জ লুৎফুল হক জানান, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের বতর্মান চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুস বাবুল এর ভাই আব্দুল ওয়াদুদ রতন গ্রুপ ও পরাজিত চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন গ্রুপের লোকজন এর মধ্যে বাজার ডাক নিয়ে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয়। পরে দুপক্ষের মধ্যে বাইরে এসে সংঘর্ষ হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, ফের সংঘর্ষের আশংকায় উপজেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো  কোনো মামলা হয়নি।
কলমাকান্দা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, প্রতি সপ্তাহের মতোই আজকে সদর ভূমি অফিসে খোলা ডাকের ব্যবস্থা করছিলাম ঝামেলা দেখে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে ডাক বন্ধ করে দিয়েছি। এখন সরকারী তহসীলদার ও খাস আদায় কমিটি, খাস আদায় করবে।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, যেখানে ঢাক হচ্ছিল সেখানে ঝামেলা হয়নি, তবে যেহেতু একটি ঝামেলা বা উত্তেজনা দেখা দিয়েছে বাজার নিয়ে, সেজন্য আমরা বাজারের খাস কালেকশন বন্ধ রেখেছি, স্থানীয় তহসিলদার এখন খাস আদায় করবে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আবার বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |