মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

পলকের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়

পলকের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়

নিজস্ব  প্রতিবেদক: সারাদেশে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ঘোষণা দিয়েছিলেন, নাশকতার কারণে মহাখালীর ডেটা সেন্টার খাজা টাওয়ারে সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়েছে। যার কারণে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। আসলে এমন বক্তব্য পুরোটাই মিথ্যাচার ছিল বলে জানিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। সংস্থাটি বলছে, পলকের মৌখিক নির্দেশ আর সরকার দলীয় লোকজনের হামলার কারণেই বন্ধ করতে হয়েছে ইন্টারনেট।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেও রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকায় অবস্থিত খাজা টাওয়ারের অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় যোগ দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী। এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশে ইন্টারনেটে কিছুটা ধীরগতি থাকলেও সংযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনা সামনে এনে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ-আইসিটি, বিটিআরসি এবং খাত সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ইন্টারনেটের নিরাপত্তা ও গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায় মহাখালীর খাজা টাওয়ারের ডেটা সেন্টারের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আমরা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি, খাজা টাওয়ারের ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। অথচ আইএসপিএবি এবং বিটিআরসি ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বারবার ইন্টারনেট বন্ধের দায় চাপিয়েছেন ডেটা সেন্টারের ওপর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইএসপিএবির এক নেতা বলেন, ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সকাল থেকেই দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিকে থ্রি-জি ও ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধের মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে বিকেল থেকে আইএসপিদেরও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের জন্য চাপ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে করণীয় নির্ধারণের আগেই নিচে আগুন ধরিয়ে কেবল কেটে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এসব দ্রুতই মেরামত করা হলেও পুনরায় ইন্টারনেট সংযোগ সরকারের নির্দেশ পেলে দিতে হবে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। নিরুপায় হয়েই সরকারের নির্দেশনা মানতে হয়েছে।

অপরদিকে বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৭ তারিখ থেকে সারাদেশে মুঠোফোন ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা এবং ১৮ তারিখ থেকে সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যাবসা কমেছে। এতে করে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে ইন্টারনেট সুবিধাভোগী আরও ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার। এর ফলে কোথাও কোথাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউব কোনো কিছুই ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা শুরু হলে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে ৩১ জুলাই দুপুর পর্যন্ত মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম বন্ধ ছিল। ৩১ জুলাই দুপুর দুইটার পর থেকে তা ফের চালু হয়।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |