শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে ২০১৪ সাল থেকে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন
ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক হিসাবরক্ষক মেহেদী হাসান আরিফ। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার ৬ ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুল ইসলামের ছেলে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) ২০২৩ সালের রাতে রাজধানীর বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক সহযোগীসহ তাকে আটক করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র্যাব। মেহেদী হাসান আরিফ নিজে প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএ) হিসাবে পরিচয় দেন। তাদের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল, জালিয়াতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাগজপত্র এবং ফটোশপে সম্পাদনা করা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি জব্দ করা হয়। মেহেদী হাসান নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ২০২৩ ইং দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে ভুয়া ছবি তৈরি করেন । ওই ছবি তার মোবাইলে, বাসায় ও অফিসে রাখতেন। তার রিসোর্টে বড় করে দেয়ালে টানিয়েও রেখেছিলেন সে ছবি।
দীর্ঘ আট বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন মেহেদী হাসান। বিগত বছরগুলোতে কেউ কি অভিযোগ করেছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেহেদী হাসান ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন। কিন্তু কোনো অভিযোগ আসেনি। সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তদন্তে বেশ কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন জায়গায় চাকরির জন্য তদবির ও নিয়োগের কাগজপত্র, প্রশ্নপত্র জালিয়াতি, প্রতারণা করেছেন। নিয়োগের প্রশ্নপত্র জালিয়াতির কারিগর বলে জানতে পারেন। মেহেদী হাসান আরিফ বিভিন্ন জায়গায় চাকরির জন্য ডিও লেটার, ভুয়া সিল ব্যবহার করেছেন। পরে তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে। জানাগেছে, প্রতারক মেহেদী হাসান আরিফ ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জামান মাষ্টারের ভাতিজা ও আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুল ইসলামের ছেলে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, আসামির রিসোর্টের মূল্য ৪ কোটি টাকা। গোয়েন্দা সূত্রে আমরা তথ্য পেয়েছি, আসামির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। শতাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করেছেন। চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের ১৭-১৮ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক পার্টনার করার কথা বলেও বিত্তশালীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।