শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা : ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) কর্মকর্তা এসআই আকরাম হোসেন ও তার টিম সদস্যদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৩ জানুয়ারী ২০২১ সালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্রাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক। তিনি দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনের সম্পাদক। সংবাদ সম্মেলনে খায়রুল আলম রফিক বলেন, আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকায় ডিবির অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় আমার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন পুলিশ সুপার শাহ্ আবিদ হোসেন ও ডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর জেরে ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে নিউ মেডিকেয়ার ডায়াগনস্টিকের সামনে থেকে আমাকে আটক করা হয়। আটক করার সময় এসআই আকরাম হোসেন আমাকে জানান, এসপি স্যার আপনাকে ডেকেছে। এখনই আমার সাথে যেতে হবে।
এসময় ডিবির এসআই আকরাম হোসেন,এএসআই জুয়েলসহ সাদা পোশাকধারী অজ্ঞাত ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য আমাকে চোখ বেঁধে একটি হায়েজ গাড়িতে তুলে নেন। গাড়িটি পুরাতন গোদারাঘাটের ওপারে চরাঞ্চলে যায়। তখন ডিবির এসআই আকরাম হোসেনের মোবাইল ফোনে অপর প্রান্ত থেকে একজন বলছেন, ‘রফিককে আটকের খবর সাংবাদিকরা জেনে গেছে। তাকে এ মুহূর্তে ক্রসফায়ারে দেয়া যাবে না। তাড়াতাড়ি তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে আসো।’ ফোন লাউড স্পিকারে ছিল। খায়রুল আলম রফিক বলেন, আমি কোনো অপরাধী না হয়েও ডিবি’র হাতে আটকের পর তিনদিন অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করেছি। ক্রসফায়ারে ব্যর্থ হয়ে আইসিটি আইনে মামলা দিয়ে আমাকে আদালতে পাঠায়। শুরু হলো আমার কারা জীবনের নতুন অধ্যায়। দুই মাস কারাভোগে আমার জীবনে আঁধার নেমে আসে। নির্যাতনের কারণে আমি আজও চোখে ঝাপসা দেখি, শরীরে প্রচণ্ড বিদ্যুৎ শকের কারণে রক্তশূন্যতাসহ বিভিন্ন মারাত্মক শরীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর আমার চোখ বাঁধা নির্যাতনের ছবি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে এসআই আকরাম এবং এএসআই জুয়েলসহ অন্যরা। এতে আমি সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হই এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। গত ১৮ জানুয়ারি এসআই আকরাম এবং এএসআই জুয়েলসহ ৭-৮ জন ডিবি কর্মকর্তাকে আসামি করে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা করি। মামলা নং – ০১। আদালত কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে মামলাটি আমলে নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন, কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন। ময়মনসিংহ আদালতে হেফাজতে নির্যাতন আইনে এই প্রথম একটি মামলা হয়। কিন্তু পুলিশ সুপার শাহ্ আবির হোসেন অতিরিক্ত ডিআইজি হয়ে ময়মনসিংহে রেঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এসপির ক্ষমতার দাপটে এবং চাপে বাদীকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আদালতে আপোষ দিতে বাধ্য করেন। অন্যতায় সাংবাদিককে গুম করার হুমকিও দেন। তৎকালীন পুলিশ সুপার শাহ্ আবিদ হোসেন বর্তমানে ডিআইজি হিসেবে টুরিস্ট পুলিশের সংযুক্ত।