বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ

শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, কুশপুত্তলিকা দাহ

ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজের কুশপুত্তলিকা টাঙিয়ে জুতা নিক্ষেপ এবং আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। পরে ক্যাম্পাসের মীর মোশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের সামনে জড়ো হয়েও শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয় তারা। এসময়ে ভবনের ভেতরে অর্থনীতি বিভাগের সভাপতির কক্ষে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির নিকট নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করার কথা ছিলো সহকারী অধ্যাপক হাফিজের, কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি।

বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, তদন্ত কমিটির সাক্ষাৎাকারের জন্য হাফিজের ক্যাম্পাসে আসার কথা ছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা কর্মসূচি ঘোষণা করে, ক্ষুব্ধ হয়ে মেইন গেট আটকে তার কুশপুত্তলিকাও দাহ করা হয়। তাকে যদি আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে এই আন্দোলন চলমান থাকবে। আমাদের দাবি- ন্যায়বিচার দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়বিচার দেয়া হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ পরিবার তাকে এই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত এবং বিভাগে বয়কট করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে শিক্ষার্থীদের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন হবে বলে আশাবাদী শিক্ষার্থীরা।

ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুলোর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল নাম্বার কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা কাপড় নিয়ে কথা বলা, নর্তকী, পতিতা, বাজারের মেয়ে বলে গালিগালাজ, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হেনস্থা, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারার ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, অন্যান্য শিক্ষকদের নাম নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে অপমান, অপদস্থ এবং চাপ দেওয়া ইত্যাদি। বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম নাহিদ বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমি বিব্রত। যেহেতু তদন্তাধীন বিষয় এবং কমিটি আমাকেও ডাকা হয়েছিল, আমি আর মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ জানান, শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র নজরুল ভবনে ১২ টার দিকে আন্দোলন শুরু করে মীর মোশাররফ ভবনের নীচে চলে আসলে আমি বিষয়টি জানতে পারি। তারা কুশপুত্তলিকাও নাকি পুড়িয়েছে বলে শুনেছি। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে গতকাল শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনেছি। আমাদের তদন্ত কমিটির কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে। এর আগে গত ৭ অক্টোবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী হেনস্তা, আপত্তিকর মন্তব্য, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ ২৭ দফা অভিযোগ তুলে অপসারণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা উপাচার্যের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন ইবি উপাচার্য।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |