মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন
মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, গত ১৫ বছরে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী এখনও ছাত্রশিবির সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী এখনও ছাত্রশিবির সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। আমরা কখনো কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে ছাত্রশিবির করতে বলি না, আর না চাই যে সবাই দলবদ্ধভাবে শিবিরে যোগ দিক। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা নীতি-নৈতিকতা, দেশপ্রেম এবং ইসলামি মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্যান্য সংগঠনকে আহ্বান জানাই, শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কাজ করুন, ক্যাম্পাসগুলোকে মাদকমুক্ত করুন। মাদক একজন শিক্ষার্থীকে ধ্বংস করে দেয়, এটা নিশ্চিত।’
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ.জে. কনভেনশন হলে আয়োজিত উন্মুক্ত অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন চবি ছাত্রশিবিরের শিক্ষা ও এইচ.আর.এম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রায়হান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী, ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী, এবং চবি শাখা ছাত্রশিবিরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী বলেন, ‘মানুষ হচ্ছে এক সামাজিক প্রাণী, যার দায়িত্ব একে অপরের অধিকার ক্ষুন্ন না করা এবং অন্যদের হত্যা না করা। তবে, আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমাদের মধ্যে কিছু পশুত্বের স্বভাব রয়েছে, যা পরিহারের জন্য তিনি কুরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের পাঁচটি বিষয় খুব গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে—চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা এবং সাহস।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের বিশ্বে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ, যোগ্য এবং সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো সে রকম কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের অন্তর্চক্ষু বাড়াতে হবে, কারণ বিপ্লব সাধিত হয় শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই।’
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখব ইনশাআল্লাহ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আমরা আগেও সচেতন ছিলাম, এবং ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীবান্ধব একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলব। আমাদের লক্ষ্য, আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় হবে মাদক ও অস্ত্রমুক্ত।’
অনুষ্ঠানে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করেন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী।