বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা: চাঁদাবাজি, দখলসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নের স্থানীয়দের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে মো. ইয়াসিন ও মো. রাজুর অনুসারীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, গাড়াখোলা ও বানিয়াপুকুর গ্রামের মাছ চাষিদের আতঙ্ক বানিয়াপুকুর ও গাড়াখেলা গ্রামের ইয়াসিন-রাজুর অনুসারীরা। উপজেলায় তাদের আধিপত্যে অসহায় ঘের মালিক ও স্থানীয় মানুষ। মাদক বিক্রি, আধিপত্য বিস্তার, প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণসহ পুরো উপজেলাজুড়ে চালাচ্ছেন চাঁদাবাজি। ইয়াসিন-রাজুর সহযোগীদের তৎপরতায় স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ীরা অনেকটা জিম্মি।
স্থানীয় মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ইয়াসিন-রাজুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলে বা প্রতিবাদ করলে মাৎস্য ঘেরে ঔষধ প্রয়োগ করে, মাছ লুট করে। এমনকি অস্ত্রদিয়ে ভয়ভীতিও প্রদর্শন করে। বানিয়াপুকুর গ্রামের ইয়াসিনসহ তার সহযোগী গাড়াখোলা গ্রামের ভাগ্নে রাজু, লিটন আকুঞ্জি এবং বেগুনবাড়িয়া গ্রামের ছোট রাজুর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। একইসাথে, ফুলতলার উঠতি কিশোর গ্যাং উত্থান ও তাদের আধিপত্য বিস্তারের পেছনে বিগত সময়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত প্রভাবশালীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। প্রশাসনের মাদকবিরোধী তৎপরতা না থাকায় পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে।
তারা জানান, ইয়াসিন-রাজু গ্যাং এর কর্মকান্ড রুখতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উপজেলার স্থানীয় জনগণ তৎকালীন সময়ে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার,জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট গণস্বাক্ষর সহ ইয়াসিন-রাজু গ্যাং এর কর্মকান্ড তুলে ধরে প্রতিকার চেয়ে আবেদন জমা দেয়। ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা গ্রামে ইয়াসিন-রাজু গ্যাং এর মাছ লুট প্রতিরোধ ও মাদকবিরোধী সমাবেশ করা হয়। সাম্প্রতি ফুলতলার গাড়াখোলা গ্রামের বিল ডাকাতিয়ার ঘের পাড়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সৌরভ সরকারের লাশ পাওয়া যায়। যা এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি করে। মাদক সেবন ও কারবারিকে সামনে রেখে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা তাদের। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সৌরভ হত্যায় ইয়াসিন রাজু গ্যাং এর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অবিযোগ আছে।
সম্প্রতি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে রাজু গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে, ইয়াসিন আছে ধরাছোয়ার বাইরে। ইয়াসিনের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নামে যা রটানো হয়েছে তা মিথ্যা। একটি মহল আমাকে ফাসাতে ৪ টি মিথ্যা মামলা করেছে। তিনি বলেন, রাজুর সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন সম্পর্ক নেই। তবে রাজু ও ইয়াসিনের ব্যক্তিগত লেনদেনের ছবি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেখানে তাদের সখ্যতার প্রমাণ মেলে। ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, রাজুসহ অনেকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে একটি মামলায় রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদকসহ আরো নানা বিষয়ে যাদের বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ রয়েছে সে সকল বিষয়ে তদন্ত চলমান। তদন্তে যারা দোষী হিসেবে বিবেচিত হবে, অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।