বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন

দিল্লির বদলে বেইজিংয়ে ঝুঁকছে নেপাল

দিল্লির বদলে বেইজিংয়ে ঝুঁকছে নেপাল

অনলাইন ডেস্ক: সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বিদেশনীতি প্রণেতারা বেশ বিব্রত বোধ করছেন। এতদিন এই অঞ্চলে ভারত নিজেকে একপেশে শক্তিশালী মনে করলেও বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু ছোট দেশ নিজেদের আরও স্বাবলম্বী করে তুলতে সচেষ্ট হয়েছে এবং তারা ভারতের ছায়া থেকে বেরিয়ে চীনের সঙ্গে সখ্যের মাধ্যমে এগোতে চাইছে। এরই ধারাবাহিকতায় চীনের সঙ্গে পূর্বপরিকল্পিত অবকাঠামো প্রকল্পে নতুন অগ্রগতি দেখতে আগ্রহী নেপালের অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আয়োজিত দিনব্যাপী বেইনিজং সফরে এই বিষয়ে সফল হতে আশাবাদী তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

চলতি বছর জুলাই মাসে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন ওলি। প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য প্রথা ভেঙে শত বছরের মিত্র দিল্লির বদলে বেইজিংকে বেছে নেন তিনি।

বেইজিং জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে ওলির। এর আগে, স্থলবেষ্টিত (ল্যান্ড লকড) দেশ নেপালকে ‘স্থল সম্পর্কযুক্ত’ (ল্যান্ড লিংকড) দেশের রূপান্তরিত করার অঙ্গীকার করেছিলেন শি।

২০১৭ সালে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্টাকচার ইনিশিয়েটিভে স্বাক্ষর করে কাঠমাণ্ডু। তবে প্রকল্প কাঠামো দাঁড় করানো হলেও এখনও কোনো কিছু বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানিয়েছে তারা।

উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রথাগত ভারত নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওলি।

অবশ্য নেপালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের চেয়ে ভারতের প্রভাবই বেশি। যেখানে কাঠমাণ্ডুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দিল্লির হিস্যা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সেখানে বেইজিংয়ের আছে মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী অন্যদিক দিয়ে এগিয়ে গেছে চীন। নেপালে তাদের অর্থায়নের পরিমাণ ৩১ কোটি মার্কিন ডলার যা ভারতের চেয়ে অন্তত তিন কোটি বেশি।

২০১৬ সালে ওলি ক্ষমতায় থাকাকালীন নেপালে তেল রপ্তানি ছ’মাসের জন্য স্থগিত করেছিল ভারত। তিনি চীনের সঙ্গে জ্বালানি তেলসংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ওই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে নেপালের একমাত্র জ্বালানি সরবরাহকারীর তকমা হারায় ভারত। আর চীনের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন পথ উন্মোচিত হয়।

এরপর থেকে নেপালে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। রাজধানীর দুশ কিলোমিটার পশ্চিমে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পোখারাতে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে ২১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে তারা। বিমানবন্দরটি গত বছর থেকে কার্যক্রম শুরু করলেও ভারতের নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারে আপত্তির কারণে পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পাচ্ছে না তারা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |