রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
একেএম,রুহুল আমীন স্বপন : ওয়েস্ট এবং স্যানিটেশন কর্মীদের ব্যবহারের জন্য পল্লবী ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে নবনির্মিত ওয়াশ ব্লক উদ্বোধন এবং পরিচ্ছন্নকর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুকি নিরসনে করনীয় বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্টিত আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ওয়াশ ফর আরবান পুওর, ডিএনসিসি ফেইজ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ০২ নং ওয়ার্ডের অধীনে মিরপুর-১২ নং এ অবস্থিত সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনে কর্মরত স্যানিটেশন কর্মী (ময়লা আবর্জনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত) এবং মশক নিধনে কর্মরত কর্মীদের ব্যবহারের জন্য নবনির্মিত নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক এর শুভ উদ্বোধন এবং পরিচ্ছন্নকর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুকি নিরসনে করনীয় বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠান ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ ইং তারিখ অনুষ্ঠিত হয় ।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান (ই), পিএসসি, বিএন । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ জিয়াউর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব), অঞ্চল-২, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, মো: মামুন চৌধুরী, কো-অর্ডিনেটর-ইউনির্ভাসাল এক্সেস, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বর্জ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ এবং সিবিও প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এম.এ. হাকিম, পরিচালক (ওয়াশ) দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে)।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্মশালার উদ্দেশ্য বর্ননা করেন অখিল চন্দ্র দাস, প্রকল্প ব্যবস্থাপক দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে), তিনি বলেন- ডিএসকে দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এরিয়াতে দরিদ্র মানুষের কল্যাণার্থে নিরাপদ পানি ও পয়: নিষ্কাশনের কাজ করে আসছে। এরই ধরাবাহিকতায় বর্জ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত নারী পুরুষের জন্য আলাদা টয়লেট এর ব্যবস্থা করা খুবই প্রয়োজন, কিন্ত সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনের সাথে জায়গার স্বল্পতার কারনে পল্লবী ২নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে ওয়াশ ব্লক নির্মান করা হয়েছে । উক্ত কাজে সহযোগিতা করার জন্য তিনি ঢাকা ওয়াসা এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানান। পরবর্তীতে এম. রেজাউল করিম, টেকনিক্যাল অফিসার-ডিএসকে সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনের সাথে যারা সরাসরি কাজ করেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়সমুহ নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। পরিচ্ছন্নকর্মী সালমা আক্তার বলেন- আমরা সারাদিন ময়লা পরিস্কারের কাজ করি। আমরা যেখানে ময়লা পরিস্কারের কাজ করি যেখানে কোন ধরনের টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা নাই । ময়লা পরিস্কার করতে করতে যখন ওয়াশ রুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে তখন আমরা কোন মানুষের বাড়ীতে গেলে তারা যেতে দেয়না। কাহারও বাসায় ঢুকতেই দেয়না, এমনকি তাদেরকে অনেকে বাসাভাড়া দিতে চায়না ।
ফাতেমা আক্তার ,নগর দরিদ্র বস্তিবাসী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি বলেন-পরিস্কার পরিচ্ছন্নকর্মীদের যাতে কেউ অবহেলা না করে সেই বিষয়ে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে । যারা আমাদের ঢাকা শহর পরিস্কার রাখছে তাদেরকে সবাই সম্নানের চোখে দেখে এই বিষয়ে সবাইকে নজর দিতে হবে । সিটি করপোরেশন থেকে যারা ময়লার কাজের ইজারা নেয় তারা যাতে তাদের সুযোগ-সুবিধার কথা, স্বাস্থ্যবীমার কথা মাথায় রাখে সে ব্যাপারে ইজারাদারের চুক্তির সাথে বিষয়সমুহ সন্নিবেশিত করার পরামর্শ দেন। বিশেষ অতিথি ঃ মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন- আঞ্চলিক লির্বাহী কর্মকর্তা বলেন ঃ ডিএসকে সহযোগিতা ওয়াটার এইড বাংলাদেশ অর্থায়নে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের উন্নত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা গ্রহন করায় ধন্যবাদ জানায় । পরিচ্ছন্ন কর্মীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা স্কীমের আওতায় আনার জন্য সকল নিরাপত্তা কর্মীদের অন্তূভূক্ত করার আহবান জানান এবং এই বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সর্বাত্তক সহযোগিতা থাকবে ।
প্রধান অতিথি ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান (ই) পিএসসি, বিএন ,প্রধান বজ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলেন ঃ ময়লা আবর্জনা ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তাদের জন্য উন্নত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থার জন্য দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও ওয়াটার এইড বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান । ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মৃত্যূ দাবী এক লক্ষ টাকা করা হবে তিনি জানান। প্রতিটি সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনে (এসটিএস) এর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি দৃঢভাবে জানান এবং আগামীকাল থেকে তিনি এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
ওয়াশ ফর আরবান পুওর, ডিএনসিসি ফেইজ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৩ টি বস্তি, ৩ টি স্কুল ৯ টি পাবলিক টয়লেট এ দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে উন্নতমানের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতকরনে ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন, হাইজিন ) কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে । উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুলসহ ৩৫০০০ বস্তিবাসী মানুষকে নিরাপদ পানির সুবিধা প্রদান করবে, ৪০০০০ বস্তিবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধা প্রদান করবে এবং ৫০০০০ বস্তিবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যাভাসের বার্তা প্রদান করবে। এরই ধারাবহিকতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ০২ নং ওয়ার্ডের অধীনে মিরপুর-১২ নং এ অবস্থিত সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনে কর্মরত স্যানিটেশন কর্মী এবং মশক নিধনে কর্মরত কমী দের ব্যবহারের জন্য নবনির্মিত নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক এ ১ টি নিরাপদ পানির স্টেশন ও ওয়াশ ব্লক (মোট ৬ টি টয়লেট চেম্বার, প্রতিবন্ধিদের জন্য ১টি টয়লেট চেম্বার), ১টি হাত ধোয়ার স্টেশন। উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তাগণ উঝক কতৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের গুনগত মানের প্রশংসা করেন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এরিয়াতে আরো বেশী বেশী সেকেন্ডারী ট্রান্সফার স্টেশনে নিরাপদ পানি ও পয়:নিস্কাশন উন্নয়নে এই ধরনের প্রকল্প গ্রহন ও বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগিদের এগিয়ে আসার জোড় আহবান জানান ।