ভারী অস্ত্র নিয়ে পাক সেনাদের ওপর আফগানিস্তানের হামলা, সীমান্তে সংঘর্ষ

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:২৭ এএম

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাদের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে আফগান সীমান্তরক্ষীরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে পাকিস্তান সেনারাও গোলাবর্ষণ করে, ফলে সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানায়, এর আগে গত শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায়। ইসলামাবাদের দাবি, ওই হামলা চালানো হয় পাকিস্তান তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) প্রধান নূর ওয়ালী মেসুদকে লক্ষ্য করে। এই হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।

আফগান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাবেই তাদের সীমান্তরক্ষীরা পাল্টা অভিযান চালিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তানি বাহিনীর বিমান হামলার প্রতিশোধে তালেবান সীমান্তরক্ষীরা পূর্বাঞ্চলে সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়েছে।”

সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, অসংখ্য আফগান সামরিক যান পাকিস্তান সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেসামরিক লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগে আফগান অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। ১০ অক্টোবর আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, পাকিস্তান কাবুলের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে এবং পাকতিকা প্রদেশের মার্ঘা অঞ্চলের একটি মার্কেটে বোমাবর্ষণ করেছে। এই ঘটনাকে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় “নজিরবিহীন, সহিংস ও নিন্দনীয়” বলে অভিহিত করে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে কাবুলে বিকট বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানের বিমান হামলার লক্ষ্য ছিল টিটিপির নেতা নূর ওয়ালী মেসুদ। তবে আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছেন, টিটিপি প্রধান কাবুলে উপস্থিত ছিলেন না এবং হামলার খবর অতিরঞ্জিত।

দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদের দায় নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সর্বশেষ এই সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করছে কূটনৈতিক মহল।

Link copied!