সাংবাদিককে চোখ বেঁধে নির্যাতন ডিআইজি, দুদক ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে অভিযোগ দাখিল

নিজস্ব প্রতিবেদক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০১:২৬ পিএম

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার সাবেক ওসি আল হেলাল মাহমুদ ও বর্তমান এসআই জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিকের পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, সাজানো মামলায় ফাঁসানো এবং ঘুষ গ্রহণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি কমপ্লেন সেল (SL-771), দুদক চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হুচার বালা গ্রামের মোছাঃ সাফিয়া।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সংবাদদাতা আনোয়ার হোসেন থানার গ্রেপ্তার–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হন সাবেক ওসি আল হেলাল মাহমুদ। ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে জামিনে থাকা অবস্থায় তাকে দ্বিতীয়বার হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চোখ বেঁধে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরদিন কথিত ছিনতাই মামলাসহ চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ০৬ জানুয়ারি জেলহাজতে পাঠানো হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, একই দিনে সাংবাদিক আনোয়ারের বাবা আব্দুস সালাম থানায় গেলে ওসি আল হেলাল মাহমুদ ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি ধার–দেনা করে এসআই জাহেদুল ইসলামের মাধ্যমে ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেন। এতে ওসি আল হেলাল মাহমুদের বিপি নম্বর ৮৭১৩১৫১০০০ উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিবারের দাবি, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন ছাত্রদলের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৯ নং চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন কমিটির সহ-সভাপতি। কিন্তু প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশ করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তার রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল রেখে পরিকল্পিতভাবে একাধিক সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়।

এদিকে এসআই জাহেদুল ইসলাম নিয়মিতভাবে তাদের বাড়ির পাশের দোকানে গিয়ে বৃদ্ধ মা, অসুস্থ বাবা ও ছোট ভাইকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে নতুন মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী মোছাঃ সাফিয়া ডিআইজির কাছে আবেদন করে জানান, কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের বাইরে রেঞ্জের অন্য জেলার কোনো নিরপেক্ষ কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করলে পুরো ঘটনার সত্যতা মিলবে।

রংপুর রেঞ্জ পুলিশের পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলমগীর হোসেন জানান, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। এর বাইরে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”

সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুল আলম রফিক বলেন, “একজন সাংবাদিককে সাজানো  মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাকে দ্রুত মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

Advertisement

Link copied!