শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

আপডেট
পিআইসির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে লুকোচুরি ,নেই ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও

পিআইসির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে লুকোচুরি ,নেই ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া :

হাওরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সুনামগঞ্জের ১২ টি উপজেলায় জেলা প্রশাসনের দেয়া নির্দেশনা মানছে না উপজেলা গুলো। অন্যান্য বছর সকল পিআইসি তালিকা ওয়েবসাইটে পাওয়া গেলেও এবছর এখনও প্রকাশ হয়নি। পিআইসির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে লুকোচুরি শুরু করেছে দায়িত্বশীলরা।

এদিকে, কয়েকটি উপজেলায় তালিকা প্রকাশিত হলেও কয়েক দফা এক পিআইসি কেটে আবার পছন্দের লোককে সংযুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি উপজেলার। এর মধ্যে আবার যে সকল পিআইসি গঠন করা হয়েছে তাদের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হচ্ছে ফোনে ডেকে এনে। আর এই কাজটি করছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

কিন্তু নিজ নিজ ওয়েবসাইটের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়ে ইউএনও এর ওয়েবসাইট গুলোতে উপজেলার পিআইসি তালিকা প্রকাশের নির্দেশ থাকলেও অধিকাংশ উপজেলা এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে কাজ করছে।

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত কমিটির সদস্য ও জেলার সচেতন নাগরিকগন বলেছেন,কি এমন গোপন বিষয় আছে যার কারনে তালিকা প্রকাশ হচ্ছে না। যা আমারা মনিটরিং বোর্ডে থাকার পরও জানতে পারছি না। কি হচ্ছে বাঁধ নিয়ে।

জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট খোঁজে দেখা যায়,২৪জানুয়ারি মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ৬ টি উপজেলায় পিআইসির আংশিক তালিকা প্রকাশিত আছে। বাকি ৬ টি উপজেলায় কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয় নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র শান্তিগঞ্জ উপজেলার আংশিক তালিকা পাওয়া গেছে। এছাড়া তাহিরপুর,জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর,শাল্লা,দিরাই উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিজ নিজ উপজেলার আংশিক তালিকা প্রকাশ হয়েছে।

ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিংয়ের জন্য গঠিত তাহিরপুর উপজেলা কমিটির সদস্য রমেন্দ্র নারায়ন বৈশাখ জানান,কাজের স্বচ্ছতার জন্য ওয়েবসাইটে তথ্য সহ তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশনা বিগত বছরেও কার্যকর ছিল। কিন্তু এবছর অনেকেই এই নিয়ম মানছেন না। ওয়েবসাইটে ঢুকলে প্রত্যেক উপজেলার পিআইসির নাম ঠিকানা সহ সকল তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তাহিরপুর উপজেলা হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী শওকতুজ্জামান জানান,নানান কারনেই পিআইসির কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে দু এক দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। আর যারা পিআইসি পেয়েছেন তাদেরকে ফোনে জানিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয় কাজ শুরু করেছে তারা।

টিআইবি’র সচেতন নাগরিক কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট খলিল রহমান জানান,তালিকা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন থেকে স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও তথ্য প্রাপ্তির জন্য ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশের একটি নির্দেশনা দেয়া আছে। এই নির্দেশনা ২০১৭সালের পর থেকে কার্যকর আছে। চলতি বছরে ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশিত না হওয়ায় স্বচ্ছতার প্রশ্ন থেকে যায়। যা কখনোই করা উচিৎ নয়।

জেলার ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরের জামান চৌধুরী ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড না করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আমার উপজেলায় এপি নাই। শুধু আমার না অধিকাংশ উপজেলায় এপিদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের কারনে একই অবস্থা। আমার উপজেলায় স্বচ্ছতার সাথেই হাওরের বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন,এবছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অসহযোগীতার কারনেই ওয়েবসাইটে পূনাংঙ্গ তালিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। তালিকা পেলেই ওয়েবসাইটে দিয়ে দিব। এবছর এখনও তালিকা পাইনি।

উল্লেখ,চলতি বছরের সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় ৪৮টি বড় হাওরে ১০৮৯ টি প্রকল্পে ২০৫ কোটি টাকা বাঁধের কাজে বরাদ্দ দেবার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পর্যন্ত বরাদ্দ হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। অর্থ ছাড় হয়েছে ২৫ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |