বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ অপরাহ্ন

আপডেট
একাত্তরের ভুল প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইব: জামায়াত আমির রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান থাকছে না সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে একবারে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব সাবেক সিইসি রউফের দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী দুর্গত জনগণের শেষ ভরসার স্থান জাতি গঠনমূলক কাজে সশস্ত্র বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা ঢাকার সড়কে অটোরিকশা চালকরা, বন্ধ যান চলাচল জেনারেল ওয়াকারের সঠিক সিদ্ধান্তে সশস্ত্র বাহিনী আবারও আস্থার প্রতীক ময়মনসিংহে ট্যুরিস্ট পুলিশের “National Integrity Strategies” বিষয়ক কোর্স এর সমাপনী অনুষ্ঠানে রেঞ্জ ডিআইজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ১১ দফা: জাবি ক্যাম্পাসে মোটরচালিত যানবাহন বন্ধ
একজন ওয়ারেন্ট মাষ্টারের মুখোমুখি

একজন ওয়ারেন্ট মাষ্টারের মুখোমুখি

একজন ওয়ারেন্ট মাষ্টারের মুখোমুখি

মোঃ রহমত উল্যাহ : দেশের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। এই জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম। নিজের দক্ষতা ও সাহসিকতা দিয়ে বদলে দিয়েছেন জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। মাদকের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেন জিরো টলারেন্স নীতি। মাদক উদ্ধারে সারাদেশের মধ্যে জয়পুরহাট হয়েছে দ্বিতীয়। এছাড়াও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলমের নেতৃত্বে টানা ৮ মাস সারাদেশের মধ্যে ওয়ারেন্ট তামিলে জয়পুরহাট জেলা প্রথম স্থান অধিকার করে চলেছে।

সাহসী এই পুলিশ অফিসার ১৯৭৭ সালের ২৮শে নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার সোহাগপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া খ্রীষ্টিয়ান মিশনারী স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু, পরে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইএসসি শেষ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে প্রবেশ করেন কর্মজীবনে। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, কর্মজীবনের নানা দিক ও সাহসী ঘটনা সম্পর্কে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হল।

প্রতিদিনের কাগজ : কর্মজীবনে কবে প্রবেশ করেন এবং প্রথম কর্মস্থল কোথায়?
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমি ২০০৬ সালে পুলিশ বাহিনীতে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে প্রবেশ করি এবং রাজশাহীর সারদায় ট্রেনিং শেষ করে ২০০৭ সালে নোয়াখালী জেলায় প্রবেশনার অফিসার হিসেবে যোগদান করি।
প্রতিদিনের কাগজ : আপনার অন্যান্য কর্মস্থলগুলো কোথায় কোথায় ছিল?
মোহাম্মদ নূরে আলম : নোয়াখালী জেলার পর সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে রাঙ্গামাটি সদর সার্কেলে ২০০৮ সালে, ২০১০ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া সার্কেলে, ২০১১ সালে মানিকগঞ্জের শিবালয় সার্কেলে, ২০১২ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার এবং ২০১৩ সালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করি। পরে ২০১৪ সালে র‌্যাব-৮ এর কোম্পানী কমান্ডার হই, ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে কর্মরত ছিলাম। ২০২০ সালে পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হিসাবে যোগদান করি। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট থেকে জয়পুরহাট জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছি।

প্রতিদিনের কাগজ : অন্য পেশায় না গিয়ে পুলিশ কেন হলেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সেই হিসেবে পারিবারিকভাবেই দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। আমি মনে করি- মানুষের সেবা করার মত এত আনন্দ আর কোথাও নেই। পুলিশ পেশা থেকে সেটা সরাসরি সম্ভব। তাই পুলিশ হওয়ার প্রতি আগ্রহ ছিল।
প্রতিদিনের কাগজ : পুলিশ হওয়ার পিছনে বাবা-মা’র ভূমিকা কেমন ছিল?
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমার বাবা ছিলেন একজন বড় ব্যবসায়ী। কিন্তু তিনি আমাকে ব্যবসায়ী না বানিয়ে দেশ সেবার জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পাশাপাশি আমার মায়ের উৎসাহও আমার পুলিশ কর্মকর্তা হওয়াতে অনেক ভুমিকা রেখেছে।
প্রতিদিনের কাগজ : কর্মজীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা বলুন।
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমি মানিকগঞ্জের শিবালয় সার্কেলে থাকাকালীন একটি ঘটনা। এক প্রতিবন্ধী তার প্রয়োজনে কিছু জমি তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে। তার চাচাতো ভাই জালিয়াতি করে ওই প্রতিবন্ধীর বসত ভিটার অংশটুকুও লিখে নেয় এবং তাকে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। পরে ওই অসহায় প্রতিবন্ধী পাশের একটি কবরস্থানে পলিথিন দিয়ে একটি ঝুপড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করে। খবর পেয়ে আমি ওই প্রতিবন্ধীকে বসত ভিটার অংশটুকু নতুন দলিল করে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এই ঘটনা আমার কাছে স্মরণীয় বলে মনে হয়। এরকম অসংখ্য সমস্যা প্রতিনিয়ত সমাধান করে দেই।

প্রতিদিনের কাগজ : ২০২২ সালে মাদক উদ্ধারে সারা দেশের মধ্যে জয়পুরহাট জেলা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। মাদকের বিরুদ্ধে আপনার এই যুদ্ধ ঘোষণা কেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : মাদক এমন একটি জিনিস, এটি যার পরিবারে প্রবেশ করে, ওই পরিবারকে পুরোপুরি বিপর্যস্ত করে ফেলে। যার ঘরে একটা মাদকাসক্ত সন্তান আছে, সে-ই জানে নরকের কষ্ট কাকে বলে। জয়পুরহাট জেলা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে এখানে মাদক অবাধে আসতে পারে। আমি দেখলাম জয়পুরহাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হলে মাদক বন্ধ করতে হবে। তাই মাদকের বিরুদ্ধে আমার এই যুদ্ধ।
প্রতিদিনের কাগজ : মাদক ও অপরাধ বন্ধে আপনি কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : মাদক ও অপরাধ বন্ধে কিশোরসহ সকল অপরাধীদের অপরাধ জগত থেকে ফিরিয়ে আনতে আমরা ক্রীড়া-বিনোদনের ব্যবস্থা করেছি। পুলিশ সুপার গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। আন্তঃথানা কাবাডি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রতিদিনের কাগজ : সারা দেশের মধ্যে জয়পুরহাট জেলা দ্বিতীয় স্থান অর্জনের পর আপনার অনুভূতি কেমন ছিল?
মোহাম্মদ নূরে আলম : ভালো কাজের স্বীকৃতি পেলে তো ভালো লাগবে। পাশাপাশি আমাদের পুলিশ বাহিনীর প্রধান মাননীয় আইজিপি স্যারের হাত থেকে কোনো পুরষ্কার পাওয়া তো আরো সম্মানের।

প্রতিদিনের কাগজ : বর্তমান জেলায় মাদকের পরিস্থিতি কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম : বর্তমানে জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক। আমাদের দিক থেকে পদক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিদিনের কাগজ : জয়পুরহাট জেলায় কিশোর গ্যাংয়ের পরিস্থিতি কেমন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমি জয়পুরহাটে যোগদানের পর যারা কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত, তাদের ক্রীড়ামুখী করে, বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে কিশোর গ্যাং বন্ধ করেছি। বর্তমানে জয়পুরহাটে কোনো কিশোর গ্যাং নেই।
প্রতিদিনের কাগজ : কিশোর গ্যাং বন্ধে কোন কাজটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : কিশোরদের ক্রীড়ামুখী করা এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
প্রতিদিনের কাগজ : এই জেলায় ইভটিজিং এর পরিস্থিতি কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম : এখানে যেসব গার্লস স্কুল, মহিলা কলেজ বা মাদ্রাসা আছে সেগুলোর সামনে আমরা সিভিল পোষাকে পুলিশ দিয়েছি। এছাড়া প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিভিল পোষাকে পুলিশের টহলে ব্যবস্থা করেছি। এভাবে আমরা জয়পুরহাটে ইভটিজিংটাকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।

প্রতিদিনের কাগজ : বর্তমানে একটি ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় যে, ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ’। এই ধরণের ঘটনা বন্ধে কোন কাজটি ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন ?
মোহাম্মদ নূরে আলম : বর্তমানে এটি একটি কমন সামাজিক ব্যধি। এটি বন্ধে আমরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় গিয়ে অভিভাবক সমাবশে করে অভিভাবকদের সচেতন করেছি। সন্তানরা কার সাথে মিশতেছে, মেয়েরা কার সাথে মিশতেছে, সন্তানরা ফোনে কি করতেছে, এসব বিষয়ে সচেতন থাকতে আমরা অভিভাবকসহ ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করে আসছি। কারণ এই ব্যধি বন্ধে অভিভাবকের ভূমিকাই কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রতিদিনের কাগজ : অপরাধীদের অপরাধের পথে পা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মাদকের ভূমিকা কতটুকু বলে মনে করেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : অপরাধের পথে পা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মাদকের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কারণ- যারা মাদকাসক্ত, তাদের হিতাহীত জ্ঞান থাকে না। আবার মাদকের টাকা যোগাড় করতে গিয়ে আরো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়।
প্রতিদিনের কাগজ : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর সহায়তায় আপনার উদ্যোগের কথা শোনা যায়। এ বিষয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে সংক্ষেপে বলুন।
মোহাম্মদ নূরে আলম : আমরা জানতে পারি একজন রিক্সাচালকের মেয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে, কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না। আমরা একটি ফাউন্ডেশনের সাথে যোগযোগ করি। ওই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা ওই মেয়ের ভর্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা দিই এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি তাকে ওয়াদাবদ্ধ করাই সে ডাক্তার হলে যেন তার মত অন্তত একজনের দায়িত্ব নেয়।

প্রতিদিনের কাগজ : আপনার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের কথা জানা যায়, বিশেষ করে ৩০ হাজার কম্বল বিতরণ। এসব সামাজিক কাজে আপনার অনুপ্রেরণা কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম : জয়পুরহাট জেলায় যোগদানের পর দেখলাম এখানে যে তীব্র শীত, আমারই কষ্ট হচ্ছে। তাহলে যারা গরীব বা নিম্মবিত্ত কিংবা অসহায়, তাদের তো আরও কষ্ট বেশি হচ্ছে। তাই আমার মনে হলো- তাদের পাশে দাড়ানো দরকার। আমি আমার কিছু পরিচিত ও শুভাকাঙ্খীর মাধ্যমে ৩০ হাজার কম্বলের ব্যবস্থা করি এবং তা যথাযথভাবে বিতরণ করি।
প্রতিদিনের কাগজ : এছাড়াও আপনার অন্যান্য কি কি সামাজিক সহায়তামূলক কাজ রয়েছে?
মোহাম্মদ নূরে আলম : সামাজিক সহায়তামূলক কাজ তো প্রত্যেক মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। আমার কাছে কোনো অসহায়ের খবর এলে সাথে সাথে তার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। যেমন, হুইল চেয়ার বিতরণ করেছি। তাছাড়া এখানে ‘বাংলা হোপ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। তারা অনাথদের লালন-পালন করে। সেখানে ১০ টি সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করেছি।
প্রতিদিনের কাগজ : আপনাকে ওয়ারেন্ট মাষ্টার বলা হয়। ওয়ারেন্ট তামিলে আপনার এই উদ্যোগের কারণ কি?
মোহাম্মদ নূরে আলম : জয়পুরহাট জেলা টানা ৮ মাস সারাদেশের মধ্যে ওয়ারেন্ট তামিলে শ্রেষ্ট হয়। আমি চিন্তা করে দেখলাম যে- ওয়ারেন্ট তামিল যতটা বেশি কার্যকর করা যাবে ওয়ারেন্টের আসামীও ধরা যাবে, পাশাপাশি পুলিশের টহল বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য অপরাধীরাও অপরাধ সংঘটন করতে ভয় পাবে।

প্রতিদিনের কাগজ : কখনো কোনো অপরাধীর জন্য কি মায়া হয়েছে?
মোহাম্মদ নূরে আলম : মায়া বলতে সব অপরাধীর জন্যই মায়া হয়। কারণ কেউই তো অপরাধী হিসাবে জন্মায় না। তারা যদি অপরাধের সাথে জড়িত না হতো তাহলে ভালো পথে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে অনেক ভূমিকা রাখতে পারতো।
প্রতিদিনের কাগজ : এই চ্যালেঞ্জিং পেশায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনটি আপনাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগায়?
মোহাম্মদ নূরে আলম : যখন কোনো সেবাপ্রার্থী আমাদের থেকে তার প্রত্যাশিত সেবা পেয়ে একটা তৃপ্তির হাসি দেয়, আমাদের জন্য দোয়া করে। তাদের দোয়া এবং হাসিটিই আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস ও অনুপ্রেরণা।
প্রতিদিনের কাগজ : অনেক মানুষ পুলিশকে খারাপ মনে করে। তাদের উদ্দেশ্যে কি বলবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : আপনি দেখেন, যে মানুষটা বিদেশ গিয়ে যথাযথভাবে আইন মেনে চলে, সেই মানুষটাই দেশে আসলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে চলে। তাদের শৃঙ্খলার আওয়ায় আনতে গেলেই পুলিশকে খারাপ বলবে। তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- সবাই আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলুন এবং পুলিশকে সহায়তা করুন এবং নিরাপদ থাকুন।

প্রতিদিনের কাগজ : আপনার নিজের বিরুদ্ধে যদি কেউ অপপ্রচার করে, বিষয়টিকে কিভাবে দেখবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : কারো মিথ্যা অপপ্রচারে আমি বিচলিত হই না, তবে কষ্ট লাগে। সে হয়তো আমাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারে নাই। আমি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে চালিয়ে যাবো। অপেক্ষায় থাকবো। হয়তো একদিন অপপ্রচারকারী তার ভুল বুঝতে পারবে এবং সেদিন ঠিকই সে আমাকে সঠিক মূল্যায়ন করবে।
প্রতিদিনের কাগজ : প্রতিদিনের কাগজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে কি বার্তা দিবেন?
মোহাম্মদ নূরে আলম : এই দেশটা আমার আপনার সবার। ৩০ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধার ত্যাগ-তিতীক্ষা ও জীবনের বিনিময়ে এবং ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে এই দেশটি স্বাধীন হয়েছে। রক্তের বিনিময়ে অনেক চড়ামূল্যে ক্রয়কৃত এই স্বাধীনতাকে যদি আমরা ধরে রাখতে চাই, স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে চাই, তাহলে সবাইকে সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার কাজে ভূমিকা রাখতে হবে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |