শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩০ অপরাহ্ন

আপডেট
গৌরীপুর ডাউকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কারচুপি করে সরকারি স্কুলের বেঞ্চ আত্মসাৎ

গৌরীপুর ডাউকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কারচুপি করে সরকারি স্কুলের বেঞ্চ আত্মসাৎ

বেঞ্চ

 বিশেষ প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ : নিলাম হয়েছে স্থানীয় একটি স্কুলের পুরাতন ভবন। অথচ সংশ্লিষ্ট নিলাম প্রাপ্ত ব্যাক্তিরা পুরাতন ভবনের সঙ্গে কারচুপি করে নিয়ে গেছে ভবনের ভেতরে থাকা লোহার বেঞ্চ। তারমধ্যে কিছু বেঞ্চ পাঠানো হয়েছে স্কুলের এসএমসি কমিটির সদস্যদের বাড়িতেও। এদিকে নিলাম ছাড়াই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে অবগত নন উপজেলা নিলাম কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রকৌশলী। সম্প্রতি এমন অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ডাউকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- এ স্কুলের একটি পুরাতন ভবন নিলামের জন্য ওই ভবনের নানা উপকরন উল্লেখপূর্বক মে মাসে প্রায় একলক্ষ টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরী করে দেন উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকোশলী (এলজিইডি) অসিত বরণ দেব।

আরও  পড়ুন: শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল গাজীপুর

এতে উল্লেখ ছিলনা বেঞ্চের কথা। ভবনটির প্রাক্কলন মুল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা হলেও এটি প্রকাশ্য নিলাম ডাকে মাত্র ৮ হাজার ৬শ টাকায় পেয়ে যান হারুন অর রশিদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। নিলামকৃত পরিত্যাক্ত ভবনটির মালামাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে সরিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম সংশ্লিষ্ট নিলাম ডাককারীকে নির্দেশ করেন। অথচ সংশ্লিষ্ট নিলাম ডাককারীর লোকজন উল্লেখিত ব্যাক্তিদের অনুপস্থিতিতেই নিলামকৃত ভবনটি ভেঙ্গে এর মালামাল নিয়ে যায়। কিন্তু এসময় তারা স্কুল কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে নিলাম ছাড়াই কারচুপির মাধ্যমে স্কুলের পাঠদানে ব্যবহৃত লোহার এঙ্গেলের তৈরী লক্ষাধিক টাকার বেঞ্চও নিয়ে গেছে।

এরমধ্যে আবার কিছু বেঞ্চ পাঠানো হয়েছে স্কুলের এসএমসি কমিটির কয়েকজন সদস্যদের বাড়িতে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফারুক মিয়া জানান- নিলামে বেঞ্চের কথা উল্লেখ না থাকলেও ডাককারীর লোকজন বেঞ্চগুলো নিয়ে গেছেন। বেঞ্চ নেয়ার সময় বাঁধা দিলেন না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-‘আমি তাদেরকে বলেছিলাম স্কুল খোলার দিন নিলামের মালামাল নিতে কিন্তু তারা বন্ধের দিন আমার অনুপস্থিতিতে বেঞ্চগুলো নিয়ে গেছে।’ নিলাম ডাককারীর পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজহারুল হক ফরিদ বলেন- ‘মূল নিলাম ডাককারী হারুন অর রশিদের কাছ থেকে নিলামকৃত ভবনটি কিনে তা অপসারণ করেছি। অপসারনের সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফারুক মিয়া ও এসএমসি সভাপতি আঞ্জুয়ারা’র স্বামীর মামুন উপস্থিত ছিলেন। এসময় বেঞ্চ নেয়ার ক্ষেত্রে তারা আমাকে বাঁধা দেননি।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে নিলাম ডাককারী হারুন অর রশিদ বলেন, আমি নিলাম ডাক পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্কুল কমিটির সভাপতির স্বামী মামুনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে ভবনের সাথে যদি তারা বেঞ্জ নিয়ে থাকে সম্পুর্ন অন্যায় করেছে আমি এর যথাযথ শাস্তি কামণা করছি। স্কুলের এসএমসি সভাপতি আঞ্জুয়ারা বেগম জানান- পুরাতন কয়েকটা বেঞ্জ ছিলো এগুলো নেয়া হয়েছে। তবে এগুলো নিলামডাকের মধ্যেই ছিলো। উপজেলা প্রকৌশলী অসিত বরন দেব জানান- উল্লেখিত স্কুলের পুরাতন ভবন নিলামের প্রাক্কলনে ফার্নিচারের কথা উল্লেখ করা হয়নি। নিলামকৃত ভবন সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ সম্বলিত চিঠি তিনি পাননি। তাই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন। উপজেলা শিক্ষা প্রাথমিক অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন- ‘নিলাম ছাড়াই স্কুলের বেঞ্চ নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে অবগত করেননি।

প্রতিদিনের কাগজ

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |