শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম শহরের দুই নাম্বার গেইট অবরোধ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে করে শিক্ষার্থীরা ষোলশহর নামেন। সেখানে তারা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারনে চকবাজার- ২ নম্বর গেট, ২ নম্বর-জিসি, বায়েজিদ-২ নম্বর এবং মুরাদপুর- ২ নম্বরে প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে গেছে। তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের অনেকেই হেঁটে গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা হতে দেখা যায়।এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘এদেশের শিক্ষা ও চাকরি কারো বাপ-দাদার উত্তরাধিকার নয়’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধার বিকাশ জারি থাক’, ‘বাপ দাদারা অস্ত্র ধরলে, কলম ধরতে ভয় কিসের বন্ধু’, ‘বলো রাষ্ট্র তুমি কার? কোটার না মেধার?’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তুহিন বলেন, “পনেরো বছর পড়াশোনা করেছি। পনেরো দিন ক্লাস না করলে কিচ্ছু হবে না। আমরা কোটা পুনর্বহাল প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করছি। কেউ ক্লাসে গেলে তাকে জাতির গাদ্দার হিসেবে সর্বাত্মক বয়কট করা হবে।বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন,চাকরি ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সবখানে কোটার ছড়াছড়ি। এর ফলে মেধাবীদের বঞ্চিত করে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরা সুবিধা নিচ্ছে। আমরা এই বৈষম্য মানি না। আমাদের আন্দোলন কোটা একেবারে বাতিলের দাবিতে নয়।
আমরা চাই, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে। কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি হলো, ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। ‘১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।