শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন

আপডেট
পুলিশ কনস্টেবলের অঢেল সম্পদ : তদন্তে দুদক

পুলিশ কনস্টেবলের অঢেল সম্পদ : তদন্তে দুদক

বিশেষ প্রতিনিধি : শেরপুরে জৈনক শরিফুল ইসলাম পুলিশ বিপি নং ৮০০০০১৬৭১২ নামে এক পুলিশের এএসআই’র চাকুরি করে আয় বর্হিভুত ভাবে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। পুলিশের ওই এএসআই ঝিনাইগাতী উপজেলা মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের চৈতাজানি গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। আয় বর্হিভুত ভাবে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইন-২০০৪এর ২৭(১১) ধারা মোতাবেক শেরপুরের সিনিয়র স্পেশাল জেলা দায়রা জজ আদালতে জৈনক ডা: এ.এফ.এম হেজবুল বারি খাঁন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

যাহার পিটিশন নং- ১/২০২৩। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে অভিযোগে আনিত সকল প্রমাণাধি চেয়ারম্যান,দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, জামালপুরে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করেন,বিচারক মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ। উক্ত মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করেছেন,দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়,জামালপুর।বাদীর দায়ের করা আদালতের মামলার সুত্রে জানা গেছে,ঝিনাইগাতী উপজেলা মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের চৈতাজানি গ্রামের হত-দরিদ্র মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে শরিফুল ইসলাম ২০০০ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে “পুলিশ কনস্টেবল” পদে যোগদান করেন। এর কয়েক বছর পর তিনি এএসআই পদে পদোন্নতি লাভ করে যোগদান করেন পুলিশ হেড কোয়াটারে।পরবর্তীতে তিনি সাবেক এক অতিরিক্ত ডিআইজি’র গানম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকেই এই এএসআই শরিফুল ইসলামের আঙ্গুল ফোলে কলাগাছ হওয়া শুরু হয়।

মামলার সুত্রে জানা গেছে,এএসআই শরিফুল ইসলাম ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ৬ বছরেই তিনি শেরপুর পৌর শহরের কাজি বাড়ী পুকুরপাড় এলাকায় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করেছেন ৫ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক একটি বাড়ী। শুধু তাই নয়,একি সময়ে তিনি ঝিনাইগাতী ও শেরপুরে ক্রয় করেছেন,১কোটি ১৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার জমি। যাহার দলিল নং ৩২৫২,তারিখ- ২৭ ফেব্রূয়ারি-২০১৩,সাব রেজি- শেরপুর,জমির পরিমাণ সোয়া তিন শতাংশ,মুল্য- ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,দলিল নং- ৯২১, তারিখ- ২৩/৩/২০১৬, জমির পরিমাণ- দেড় শাতাংশ,মুল্য- ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা,দলিল নং- ২৯০১,তারিখ- ১৮/১০/২০১৭, জমির পরিমাণ – ৯৭ শতাংশ, মুল্য- ৩২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, দলিল নং- ২৯০৭, তারিখ- ১৮/১০/২০১৭,জমির পরিমাণ – ২৫ শতাংশ,মুল্য- ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা,দলিল নং- ১৬৮৩, তারিখ- ৫/৭/২০১৮, জমির পরিমাণ – ১ একর ৩০ শতাংশ, মুল্য- ৪৭ লক্ষ টাকা,দলিল নং- ১৫২৫৬, তারিখ- ১৭/১১/২০১৬, জমির পরিমাণ – সাড়ে তিন শতাংশ, মুল্য- ২১ লক্ষ টাকা।

এছাড়াও নানা জায়গাতে নামে বেনামে রয়েছে তার অঢেল সম্পদ যা তদন্তে বের হয়ে আসবে। একজন পুলিশের এএসআই’র এতো অল্প সময়ে এতো অঢেল সম্পদের মালিক কিভাবে হলো- বুঝতে পারছেনা এলাকাবাসীও। এলাকার সকলেই হতবাক এই পরিবারটিকে দেখে। যে পরিবারটি পুলিশে চাকুরি হওয়ার আগে নুন আনতে পান্তা ফোরাতো।এ ব্যাপারে এএসআই শরিফুল ইসলামের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাহার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার সহোদর ছোট ভাই শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,দুদকে যেহেতু তদন্ত চলছে,সেহেতু এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা।তবে আপনাকে আমি দেখে নিব এই সংবাদ প্রকাশ করলে।আদালতে দায়ের করা এই মামলার বাদী ডা: এ.এফ.এম হেজবুল বারি খাঁন জানান,যেহেতু আমি ওই পুলিশের মুখোশ উন্মোচনের জন্যে মামলা করেছি,সেহেতু আমি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |