বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন

দেবীগঞ্জে আ.লীগের নেতা বন বিভাগের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগে আটক

দেবীগঞ্জে আ.লীগের নেতা বন বিভাগের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগে আটক

মোঃ এনামুল হক, দেবীগঞ্জ: পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বন বিভাগের রোপন করা দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খয়ের বাগান এলাকায় ১শ ২৭টি গাছ রাতের অন্ধকারে কেটে নেয়ার অভিযোগে খোরশেদ আলম শাহ নামের এক আওয়ামী লীগের নেতাকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে খোরশেদ আলম শাহ কে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে এসব গাছ কেটে নেয়া হয়। গাছগুলো মেহগনি, আকাশমনি, শিশুগাছ, ইউক্যালেকট্রোসহ বিভিন্ন প্রজাতির। নৈশ প্রহরীরা জানান, আমরা রাত ১২টা পর্যন্ত খয়ের বাগান এলাকার বন বিভাগের গাছগুলো পাহারা দেই। পাহারা শেষ করে আমারা চলে আসার পর রাতের অন্ধকারে ১শ ২৭টি গাছ কেটে ফেলা হয়।

এঘটনায় দেবীগঞ্জ উপজেলার ৩নং সদর ইউনিয়নের তালতলা সরকারপাড়া এলাকার মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে খোরশেদ আলম শাহকে আটক করা হয়েছে। খোরশেদ আলম শাহ দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। খোরশেদ আলমের দেবীগঞ্জ সদরের পৌরসভার কাচারী পাড়া এলাকাতেও তার বাড়ি রয়েছে। গাছ কাটার খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সরজমিনে পরিদর্শন করেন। পরে সেনা সদস্য ও বন বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে প্রায় ৫ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করেন। বন বিভাগের উপকার ভোগীরা জানান, খোরশেদ আলম খয়ের বাগান এলাকার বন বিভাগের প্রায় ২৫/২৬ জমি দখল করেছে। ওই ২৫/২৬ বিঘা জমিতে বন বিভাগের লাগানো অনেক গাছ ছিল। সে সব গাছ রাতের অন্ধকারে কেটে সাবাড় করে নিয়ে যায়। তারপরে সে জমিতে বাদাম গাছ লাগান। ২৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতেও ২৫/৩০ মিলে বাগানে এসে মেশিন দিয়ে ১শ ২৭টি গাছ কেটে ফেলে। আমরা গাছ কাটার সময় বাধা দিলে খোরশেদ আলম ও মজু নামের এক ব্যক্তি হুমকি দিয়ে বলেন, এরপর পাহারা দেয়ার জন্য আসলে কাফনের কাপড় পড়ে আসিস।

উপকার ভোগীরা আরও বলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু দখল করে রেখেছেন প্রায় ২০বিঘা জমি। এমু চেয়ারম্যান থাকা কালে সে নিজে উপস্থিত থেকে রাতের অন্ধকারে লোকজন নিয়ে বন বিভাগের রোপন করা গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। স্থানীয় উপকার ভোগীরা আরও বলেন, দেবীগঞ্জ বন বিভাগের সাবেক বিট অফিসার নবারুন রায়ের সাথে দেবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু যোগসাজস করে খয়ের বাগান এলাকার রোপন করা গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। নবারুণ রায় দেবীগঞ্জের খয়ের বাগানের গাছ কাটার পিছনে মদদ দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। দেবীগঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে আমরা উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানাই। পরে পঞ্চগড় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসেন। এ ঘটনায় মামলা করা হবে৷ পঞ্চগড় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক নুরু নাহার বলেন, দেবীগঞ্জ রেঞ্জ অফিসে কোন আর্মস নাই। নৈশ প্রহরীরা খালি হাতে গাছ পাহারা দেন। যারা বন বিভাগের গাছ কেটে নিয়ে যায় একসাথে অনেক লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসে। যার কারনে তাদের সাথে মোকাবিলা করা যায়না। দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, গাছ কাটার অভিযোগে খোরশেদ আলম শাহ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |