শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৯ অপরাহ্ন

আপডেট
ডিমের বাজার অস্থির, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ডিম

ডিমের বাজার অস্থির, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ডিম

ডিমের বাজার অস্থির, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ডিম

কামরুল হাসান, মিরসরাই প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় অস্থির ডিমের বাজার। প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ টাকা ধরে। সে হিসেবে প্রতি হালি ডিমের দাম ৬০ থেকে ৬৪ টাকা। প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৮০ থেকে ১৯২ টাকা পড়েছে। যা সাধারণ মানুষের ক্ষয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে। খামারী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রতি ডিমে দাম বেড়ে যায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। অতিরিক্ত মুনাফা নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগিরা। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে খামারীদের দাবী সম্প্রতি স্বরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় অনেক খামার পানিতে ডুবে গেছে। এতে আগের চেয়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিমের দাম বেড়েছে। এছাড়া লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খামারী প্রতিপিস ডিম বিক্রি করছেন ১১ টাকা থেকে ১১ টাকা ৫০ পয়সা। তা খুচরা দোকানগুলোতে ১৫ থেকে ১৬ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।যার প্রভাব এসে পড়েছে মধ্যবিত্তের ঘাড়ে। এছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষ ও ব্যাচেলর শিক্ষার্থীরা ডিমের দাম বাড়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, গরীবের সুষম খাদ্যের মধ্যে প্রথম ছিলো ডিম। সেটাও যদি সিন্ডিকেটের থাবায় পড়ে, তাহলে আমরা যাবো কোথায়? ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও ১৫০ টাকায় ডজন ডিম কিনেছি, এখন কিনতে হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। খুচরা দোকানে ডিমের পিস হিসেবে কোথাও ১৫ টাকা, আবার কোথাও ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, বর্তমানে ডিমের দাম ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ফলে বেচাকেনাতেও ভাটা পড়েছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ক্রেতাসংকটে ডিমগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারইয়ারহাট পৌর বাজারের এক ডিম ব্যবসায়ী বলেন, বড় বড় আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়িয়েছেন। ফলে তাদের কাছ থেকে বাড়তি দরে ডিম কিনতে হচ্ছে। সরকার যদি বিষয়টিতে এখনই নজর না দেন তা হলে খুচরায় প্রতিপিস ডিমের দাম ১৭ টাকায় ঠেকতে বেশি দিন সময় লাগবে না।

মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘ডিমও এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। কোন পন্যে নিয়ন্ত্রন নেই। যার যেভাবে খুশী দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’

উপজেলার করেরহাট একরাম পোলট্রির স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ একরামুল হক বলেন, ‘আমার খামারে ৫ হাজার লেয়ার মুরগী রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৪ পিস ডিম উৎপাদন হয়। এবারের বন্যায় আমার প্রায় ৭০ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এখন কিছুটা ভালো দাম পাচ্ছি। এখন পাইকারী ১০০ পিস ডিম ১১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা কেন অতিরিক্ত টাকায় বিক্রি করছে বুঝতেছিনা। মিরসরা উপজেলা ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ডিমের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। তাই আমাদের এখানে বেচাকেনাও কমে গেছে। কিন্তু আমাদেরও তো বাড়তি দরে কিনে আনতে হচ্ছে। তাই বাড়তি দরে বিক্রি না করে উপায় নেই।

মিরসরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ বলেন, বাজারে মাছ সবজির সরবরাহ কম, দামও চড়া। তার উপর বন্যার প্রভাব তো রয়েছে। আমাদের ডিমের উৎপাদন আরো বাড়ানো দরকার। তবে যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়িয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক করার বিকল্প নেই বলেই জানান উৎপাদন সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |