শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

আপডেট
বাউফলে ভূমিহীন পারভীন পলেথিন ছাপড়ায় বসতি

বাউফলে ভূমিহীন পারভীন পলেথিন ছাপড়ায় বসতি

সাইফুল ইসলাম,বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফলে ধানদী গ্রামে ভূমিহীন পারভীন বেগমের ১১ সদস্য পরিবার নিয়ে পলেথিন ছাপড়ায় মধ্যে জীবন যাপন করেছে। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধান্দী গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ড বসতী তার। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ধান্দী বাজার দক্ষিনের  দিকে কালাইয়া-ধান্দী পাকা সড়কের পূর্বপাশে তেতুঁলিয়া নদীর কুলে ঝোপঝাড় ও পানির ডোবা উপরে কাঠের পাঠাতন ছেড়া ময়লা পলেথিন ছাপড়ায় যার জীবননিদ্রা। স্বামী, স্ত্রী, ছেলে বউ এবং নাত-নাতনী একত্রে মাত্র ১৫ ফুট জায়গার মধ্যে রাত কাটাতে হচ্ছে। গতকাল সকালে সরেজমিনে প্রতিদিনের কাগজকে প্রতিনিধিকে নিয়ে পারভীন তার স্বামী বজলুসহ পরিবারকে নিয়ে নদীর কুলে যায়। দুই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে হাউমাউ করে কেদে কেদে হাতের ইশারা দেখান সেই পূর্বে বসতবাড়ী যা নদীর মধ্যে লঞ্চ নৌকা চলাচল করছি। নদী বিলীন দেখিয়ে বারবার দাবী করেন একটি টুকরো জমির।

বজলু হাওলাদার সাথে আলাপ চারিতায় জানা যায়, চার বছর আগে তেত্ুঁলিয়া নদীতে বিলীন হয়ে যায় ৩০ শতক বসতবাড়ি ও কৃষি জমি। ৩ ছেলে মেয়ে নাত-নাতনীসহ ১১ জন কে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে। খোজ নিয়ে জানা যায়, পারভীন বসতবাড়ি তেতুঁলিয়া নদীতে বিলীন হওয়ার পরে চর রায়সাহেব আদর্শগ্রামে একটি থাকার ঘর পেলেও ওই এলাকায় কাজের সংকট দেখা দেয়। ওই চরে যেখানে যায় সেখানে কাজের বাঁধা। আদর্শ গ্রামে ২ মাস থাকার পরে কাজ না পেয়ে নিজ ধানদী গ্রামে আসতে বাধ্য হয়। ভাসমান অবস্থায় পলেথিন ছাপড়ায় জীবন চাকা চালাতে শুরু করেন। স্পিড ট্রাস্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী সালমা বেগম বলেন, স্টার ফর হারল্যান্ড ক্যাম্পেইন প্রকল্পের ভূমিহীন দলের একজন সদস্য। ভূমিহীন দলের মাধ্যমে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাধ্যমে ভূমিহীন সনদ গ্রহন করে থাকে। বিগত সরকার দেশে খাসজমি বন্দোবস্ত মৌখিক ভাবে বন্ধ রাখলে পারভীন এ মৌখিক আইনের বেড়াজালে আটকে পড়ে থাকে।

খাসজমি এবং ভূমিহীন পরিবারকে নিয়ে অনুসন্ধান করে জানাগেছে, উপজেলা ভূমি অফিস তথ্যানুসারে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ও নাজিরপুর, কাছিপাড়া ও ধুলিয়া ইউনিয়নের চরসহ ১৫ টি ইউনিয়নে মোট চিহ্নিত খাসজমি হচ্ছে প্রায় ২ হাজার একর। বে সরকারি ভাবে খাসজমি হচ্ছে তার কয়েকগুন বেশি। উন্নয়ন কর্মী রিনা ঘোষ বলেন, বাউফল উপজেলার চরাঞ্চলে যে পরিমান খাসজমি রয়েছে এবং যে পরিমান ভূমিহীন আছে। খাসজমি বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুসারে বন্টন করলে চরাঞ্চলে শতভাগ ভূমিহীন মুক্ত চর হিসাবে মডেল হতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ এবং নাজিরপুর ইউনিয়নে এএলআরডি সহযোগিতায় স্পিড ট্রাস্ট ভূমিস্বত্ব নিয়ে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এলাকায় ভূমি অফিস এবং চরাঞ্চলে দালাল মূক্ত করার জন্য ১১ টি জন সমবায় দল এবং স্টান্ড ফর হারল্যান্ড ৩টি দল রয়েছে। তার দলীয় সভায় মাধ্যমে ভূমি সাক্ষরতা দিয়ে আসছে। এতে করে ভূমি দ্বন্ধ কমে আসছে। মিউটেশন বাড়ছে। সরকারি কর আদায় ভূমি খাজনা প্রদানে উদ্ধুদ্ধ করছে। নাজিরপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান সহিদুল আলম জানান, ধান্দী গ্রামের মধ্য সবচেয়ে দরিদ্র ভূমিহীন পরিবার হচ্ছে বজলু হাওয়ালাদার ও পারভীন বেগম এর পরিবার। বর্তমানে তেতুঁলিয়া নদীর পাড়ে ভাসমান অবস্থায় জীবন যাপন করেছে। বাউফল উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রতীক কুমার কুন্ড ভূমি বন্দোবস্ত বিষয় জানান, উপজেলার চরাঞ্চলে অনেক খাসজমি আছে । যা ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়া যেতে পারে। বর্তমানে এ অঞ্চলে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া বন্দোবস্ত। জেলা পর্যায় থেকে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া চালু করলে আমি উপজেলা থেকে ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টন করতে ইচ্ছুক।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |