মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

আপডেট
দেবীগঞ্জে গনঅধিকার পরিষদের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত ফ্যাসিবাদের পুনর্জীবন ঘটলে দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে: সাভারে রিজভী  কুলিয়ারচরে প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য সহকারী শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন সৌমিত্র শেখরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুদকের চিঠি মুরাদনগরে উপজেলায় জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে কিশোরীদের এইচপিভি টিকা প্রদান গোপালপুরে ১৪’শ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক ময়মনসিংহে বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভা নালিতাবাড়ীতে গারো পাহাড়ের ঢাল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে ইউপি সদস্যদের অপসারণ না করার দাবিতে মানববন্ধন ও র‍্যালি স্ত্রীর ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করা হারুন মেম্বার গ্রেপ্তার
কুলিয়ারচরে প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য সহকারী শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন

কুলিয়ারচরে প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য সহকারী শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন

মোঃ নাঈমুজ্জামান নাঈম: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা সদরে অবস্থিত বেগম নুরুন্নাহার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মতিয়ার রহমান এর সাথে বেতন বৈষম্য নিয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন সহকারী শিক্ষকগণ । আজ সোমবার (২১ অক্টোবর, ২০২৪) সকাল ১১ টায় ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি পালন করেন সহকারী শিক্ষকগণ ।  বেগম নুরুন্নাহার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আবু হানিফ (টিআর) বলেন, প্রধান শিক্ষক অত্র বিদ্যালয় হতে মাসিক ভাতা গ্রহণ করেন ১৭ হাজার টাকা। প্রক্ষান্তরে একজন সহকারী শিক্ষক ভাতা পান মাত্র ১ হাজার টাকা। এমনিভাবে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে দুটি ঈদ বোনাস বাবদ গ্রহণ করেন, ৩৪ হাজার টাকা।
তন্মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষক পান মাত্র ২ হাজার টাকা। বার্ষিক নৈমিত্তিক ছুটি  (সিএল) বাবদ প্রধান শিক্ষক গ্রহণ করেন ১৭ হাজার টাকা আর একজন সহকারী শিক্ষক পান মাত্র ১ হাজার টাকা। এ বেতন বৈষম্য নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বিরোধ চলছে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে  গত ৮ অক্টোবর অত্র বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত আবেদন দেয়া হয়। আবু হানিফ বলেন, গত জুলাই মাস থেকে বেতন বৈষম্য দূরীকরণ না হওয়া অদ্যবধি পর্যন্ত বিদ্যালয় প্রদত্ত ভাতা গ্রহণ করছেন না সহকারী শিক্ষকগণ। এমনকি প্রধান শিক্ষকের কোনো কাজেই সহযোগিতা করছেন না তাঁরা। পরবর্তীতে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে  মিটিং করে বেতন বৈষম্য দূরীকরণের আশ্বাস পেয়ে পুনঃদিবস কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যান বলে জানান তিনি ।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা সুলতানা বলেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য নিয়ে আজকে পুরোদমে ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি চলছে। তিনি বলেন, বেতন বৈষম্য নিয়ে প্রধান শিক্ষকের প্রতি সহকারী শিক্ষকগণ অনেক অসন্তোষ। যার ঠিকমতো ক্লাসে মনোযোগ দিচ্ছেন না সহকারী শিক্ষকগণ।  সিনিয়র শিক্ষক আছমা বেগম বলেন, প্রধান শিক্ষকের আচরণ খুবই খারাপ এবং সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। বেতন বৈষম্য নিয়ে আছমা বেগম বলেন, প্রধান শিক্ষকের নিয়োগপত্রে লিখা ছিলো চাকরি স্থায়ীকরণের ভিত্তিতে সবরকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। স্থায়ীকরণের নিয়ম হলো দুই বছর।
কিন্তু তিনি তা না করেই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।
সহকারী শিক্ষক মোঃ উজ্জল মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক অত্র বিদ্যালয় প্রদত্ত বছরে ভাতা পান প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আর একজন সহকারী শিক্ষক পান মাত্র ১৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এতো বৈষম্য রেখে নতুন বাংলাদেশ চলতে পারে না। প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণের জোর দাবি জানাচ্ছি। সহকারী শিক্ষক তামান্না শারমিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবতই প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য নিয়ে আমাদের বিরোধ চলছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বেতন বৈষম্য দূরীকরণে কোনো প্রদক্ষেপই নিচ্ছেন না। আমরা যখন বেতন বৈষম্য দূরীকরণের কথা বলি তখনই প্রধান শিক্ষক বলেন স্কুলের ফান্ড ভালো না। কিন্তু প্রধান শিক্ষক যে বছরে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিচ্ছেন তখনতো ফান্ডের কোনো সমস্যা থাকে না। তিনি বলেন, আমরা চাকরিতে যোগদানের দুই বছর পর থেকে বিদ্যালয় প্রদত্ত ভাতা নিচ্ছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয় প্রদত্ত ভাতা নিচ্ছেন।
সহকারী শিক্ষক রনি চন্দ্র বনিক বলেন, আমরা যখন নতুন যোগদান করি তখন বিদ্যালয় প্রদত্ত ভাতা পায় সরকারি বেতনের ৬% আর প্রধান শিক্ষক পান ৪২% আর সহকারী প্রধান শিক্ষক পান ১৫%। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বেতন বৈষম্য নিয়ে শিক্ষকগণ কর্মবিরতি পালন করায় দুটি ক্লাস হয়নি। ইউএনও স্যারের সাথে মিটিং করে পরবর্তী ক্লাসগুলো করেছেন শিক্ষকগণ।  বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, বেতন বৈষম্য নিয়ে সহকারী শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে সকল শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিটিংয়ে বেতন বৈষম্য দূরীকরণের বিষয়ে প্রদক্ষেপ নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউএনও স্যার।  এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি সাবিহা ফাতেমাতুজ্-জো্হরা বলেন, প্রধান শিক্ষকের সাথে বেতন বৈষম্য নিয়ে সহকারী শিক্ষকদের পুনঃ কর্মবিরতি পালনের বিষয়ে অবগত হয়েছেন এবং খুব শীঘ্রই বেতন বৈষম্য দূরীকরণে সহকারী শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |