বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ অপরাহ্ন
হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর): অতি বৃষ্টি, নদ-নদী এবং অপরিকল্পিত মাছের ঘেরের উপচে পড়া পানিতে যশোরের কেশবপুরে ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১০৪টি গ্রাম তলিয়ে গেছে । মানুষের ঘর-বাড়িতে পানি উঠেছে। মানুষ টং ঘর বেধে আশ্রয় নিয়েছেন যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে। পানি নিস্কশনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে হরিহর, বুড়িভদ্রা, আপার ভদ্রা ও শ্রী-হরি নদীর পলি অপসারণের কাজ শুরু করলেও পানি সরার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
আগামী বোরো মৌসুমে কৃষকরা যাতে আবাদের সুযোগ পান, তাকে পুজি করে মৎস ঘের মালিক ও এলাকার কিছু স্বার্থানেষী মহল বিভিন্ন স্লুইস গেটের মুখে সেচ পাম্প দিয়ে পানি সেচ প্রকল্প চালু করেছেন। আর এই সেচ প্রকল্পের খরচ নির্বাহ করতে জমির মালিক পক্ষের সাথে কোন প্রকার আলোচোনা ছাড়ায় জমির মালিকদের বিঘা প্রতি এক হাজার টাকা প্রদান করতে হবে। কোনো জমির মালিক টাকা দিতে ব্যার্থ হলে জমির হারির টাকা থেকে কেটে নেয়া হবে বলে প্রচারনা চলছে। এখবরে এলাকায় জমির মালিকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বড়েঙ্গা গ্রামের কৃষক তাইফুর ইসলাম জানান, আমার পরিবারে ১০০ বিঘার অধিক জমি রয়েছে। সেচ কমিটির পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ না করেই বিলের পানি নিষ্কাশনে বড়েঙ্গা স্লুইস গেটের মাঁথায় সেচ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাঁজিয়া ইউনিয়নের গড়ভাঙ্গা গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, ২৭ বিলে তার জমি রয়েছে। জামির পানি সেঁচের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু জমির মালিকের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়ায় বিলের পানি সেঁচ শুরু করেছেন। সেঁচ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, যে টাকা খরচ হবে তার অর্ধেক টাকা জমির মালিককে বহন করতে হবে। একই ভাবে বুড়ুলি স্লুইস গেটের মুখে ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য সুফলাকাঠি ইউনিয়নের ডহুরি বিলের ৮ ব্যান্ড স্লুইস গেটের মুখে সেচ পাম্প স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পানি নিষ্কাশন সেচ কমিটির সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মুনজুর রহমান বলেন, উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়ন এবং সুফলাকাঠি ইউনিয়নের একাংশের পানি নিষ্কাশনের জন্য বুড়ুলি গেটের মাথায় আগামী বোরো মৌসুমে বিল গুলোতে যাতে ধানের আবাদ করা যায় সেই লক্ষে আমরা সেঁচ কার্যক্রম শুরু করেছি। এখানে যে টাকা খরচ হবে তার অর্ধেক ঘের ব্যবসায়ীরা দেবেন এবং বাকি অর্ধেক জমির মালিকের নিকট থেকে নেওয়া হবে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, স্থায়ী পানি বদ্ধতার হাত থেকে মুক্ত হয়ে আগামী বোরো মৌসুমে যাতে বিলগুলোতে কৃষক ধানের চাষ করতে পারেন, সে লক্ষে বিভিন্ন সেঁচ প্রকল্প করে বিলের পানি নিষ্কাশন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। যতটুকু জানা গেছে এলাকার ঘের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে এই পানি নিষ্কাশন শুরু হয়েছে।