শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন

কর্মস্থলে দেড় বছর অনুপস্থিত ক্লিনিক ব্যবসায় জড়িত চিকিৎসক দম্পতি

কর্মস্থলে দেড় বছর অনুপস্থিত ক্লিনিক ব্যবসায় জড়িত চিকিৎসক দম্পতি

 নীলফামারী প্রতিনিধি:  নীলফামারীর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. জি এম আরিফুর রহমান ও ডা. সামান্তা সেফিন রিমা দেড় বছর ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে অধিদপ্তর থেকে তাদের একাধিকবার শোকজ করা হলেও কোন জবাব পাওয়া যায়নি বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. জি এম আরিফুর রহমান স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।

নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় দেড় বছর আগে ওই চিকিৎসক দম্পতি নীলফামারী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে যোগদান করেন। তাদের মধ্যে সামান্তা সেফিন রিমা মেডিকেল অফিসার ক্লিনিক ও তার স্বামী জি এম আরিফুর রহমান মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ-এফপি)। দম্পতিদ্বয় যোগদানের পর মাসে ১-২ দিন কমর্স্থলে আসলেও ২০২৩ সালের ২৬শে নভেম্বরের পর থেকে তিনি আর কর্মস্থলে আসেননি। সূত্র জানায়, চিকিৎসক দম্পতিকে কুড়িগ্রাম থেকে নীলফামারীতে বদলি করা হয়েছিল। সূত্র জানায়, তাদের বাড়িও কুড়িগ্রাম জেলাতেই। ওনারা একাধিক ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় যোগদানের পর ১-২ দিন কর্মস্থলে আসলেও এখন আর আসছেন না।

এ ব্যাপারে নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমোতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিতির থাকায় একাধিকবার শোকজ করা হয়। অনুপস্থিতির বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এ ব্যাপারে সহকারী পরিচালক (সিসি) ডা. রোখসানা বেগমও চিকিৎসক দম্পতির অনুপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাদের অনুপস্থিতির ফলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আগত শত-শত মা ও শিশুরা যেমন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি কেন্দ্রের সমস্ত কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

এদিকে গত প্রায় ৫ বছর থেকে শুধুমাত্র অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকের অভাবে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের। সূত্র জানায়, প্রতিমাসে অন্তত ১০থেকে ১২টি করে সিজারিয়ান অপারেশন হওয়ার কথা থাকলেও তা বন্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র ওই চিকিৎসকের অভাবে। বিষয়টি বারবার সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে অবহিত করার পরেও কোনো ফল না হওয়ায় গত ৫ বছরে প্রায় ২ শতাধিক রোগী সিজারিয়ান অপারেশন থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ৩০ লক্ষাধিক টাকা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এছাড়া এনএসভি ও লাইগ্রেশন কার্যক্রমও বন্ধ থাকার পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমেও ভাটা পড়েছে। অপরদিকে কুড়িগ্রামের স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ কুড়িগ্রাম শাখার সাধারণ সস্পাদক জি এম আরিফুর রহমান এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে সেন্ট্রাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই ক্লিনিকে তার সহধর্মীনি ডা. সামান্তা সেফিন রিমাও নিয়মিত রোগী দেখলেও কর্মস্থলে আসছেন না।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |