সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
সাইফুল ইসলাম, বাউফল (পটুয়াখালী): বাউফল উপজেলার কালাইয়া বাজারসহ বগা, কালিশুরী ও কাছিপাড়ার আগাম ধান কালাইয়া হাটে উঠতে শুরু করেছে। যেন ধানের বাজার জমজমাট। উপজেলার আমন ধান ঢাকাস্থ মুন্সিগঞ্জ,গাজীপুর, মদনগঞ্জ, ইশরদী জেলার বয়লারে নেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর ন্যায় এ বছরেও প্রতি সপ্তাহ হাজার হাজার হেক্টর টন ধান ক্রয়-বিক্রি হচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি বিক্রি করা হবে বলে ক্রেতা-বিক্রেতা জানান। বীজ সংকট ও বৈরি আবহাওয়া থাকলেও এ বছর জমিতে আমনে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনাময়। চলতি বছরের উৎপাদনকৃত ধানের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় জাতের মোটা ধান, চিকন, আমন, বউয়ারী, মনোহার, মৌলতা, চিঙ্গাই, আয়জন, শাকুর কড়া, রাজাহাইল, কইয়া ধান বোরো, চিঙ্গাই ও ডিঙ্গামনি। উচ্চ ফলনশীল ধানের মধ্যে রয়েছে, ব্রী ধান ১১, ২২, ২৩, ৩৪, ৪০, ৪১, ৪৬, ৫০ (বাংলামতি সগন্ধি) ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪ এবং ৫৭।
সরেজমিন দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের বিখ্যাত কালাইয়া হাট। প্রতি সোমবার হাটবার হলে সপ্তাহ ৭ দিন ধান হাট সরগরম। কার্তিক মাস থেকে এ সরগরম শুরু হয়েছে। ফালগুন মাস পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন ট্রাক ও কার্গু ভতি ধান নেওয়া হচ্ছে এলাকার বাইরে। কালাইয়া বাজারে পাশ্ববর্তী এলাকা চরের ধান সহ ভোলা জেলা এবং দশমিনা এলাকা ধান অত্র কালাইয়া বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলার আমন ধান ঢাকাস্থ মুন্সিগঞ্জ,গাজীপুর, মদনগঞ্জ, ইশারদী, জেলার বয়লারে নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখিত এলাকার বয়লারে আমন ধান প্রক্রিয়াকরন মাধ্যমে চাউল করে বিভিন্ন এলাকা রপ্তানি করা হচ্ছে।
উপজেলায় আমন ধানের লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হয়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় আমন ধানের জমির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৭ হাজার ৪শ হেক্টর। যার উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। অর্জিত হয়েছে ৩৮ হাজার ১০২ হেক্টর। উপজেলার চাষীদের আমন চাষে উদ্ধুদ্দ করনের জন্য ২৪০ টি প্রদর্শনীয় করা হয়েছে । প্রদর্শনীতে লবন সহিঞ্চ জমিতে আমন চাষ পদ্ধতি ও বীজ বিনিময় প্রকল্প গ্রহন করা হয়। একজন চাষীর হিসাব অনুসারে, কড়া প্রতি (৩ শতাংশ) জমির সমস্ত খরচ শেষে চার শত থেকে পাচঁ শত টাকা । প্রতি ৩ শতাংশ (১কড়া) জমির মূল্য ২ শ টাকা, রোপন ৩শ টাকা, সার ওষুধ ১শ টাকা এবং চাষ কর্তণ ১শ টাকা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, আবহাওয়া অনুকুল থাকা এবং কৃষকের আন্তরিক চেষ্টা এবং যত্ন থাকায় আমন ধান উৎপাদন ভালো হয়েছে। গত ৫ বছরের তুলনায় এই বছর সার ওষুধের দাম অনেক কম। কালাইয়া বাজার ধান আড়ৎ সমিতির সদস্য কালাইয়া ধান বাজার ১৭ জন আড়ৎ মালিক নিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি রয়েছে। ধান বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা স্বার্থ অধিকার সংরক্ষণ করা কমিটির মুল উদ্দেশ্য।
উপজেলার বাইরে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা থেকে পাইকারী ব্যবসায়ী যাতে ধান ক্রয় করতে পারে। এবং অত্র এলাকার চাষী যাতে ধান বিক্রি করতে পারে এ বিষয় সহযোগিতা করে থাকে। প্রতি সপ্তাহ ৩০-৩৫ হাজার হেক্টর ধান কেনা-বেচা হয়। কালাইয়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এ এসআই মো: মাসুদ জানান, কালাইয়া ধানের হাটের দিকে পুলিশের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। যদিও আড়ৎ মালিক সমিতির উদ্যোগে পাহাড়াদার রাখা হয়েছে। তাদের পাশাপাশি পুলিশ বিশেষ সাপোর্ট দিয়ে থাকে। ধান মাপে কম দেওয়া, চুরি করা এবং আইন শৃংখলা অবনতি কোনো অভিযোগ করা হলে তাদের দায়েরকৃত অভিযোগ তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজন্যী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।