বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন
ছাদেকুল ইসলাম রাজু, রংপুর: স্যাভেন ও স্টোরিজ জাতের আলু চাষ করছেন রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের পন্ডিত পাড়ার তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুলাহ্ আল মামুন(রুবেল)। তাঁর সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে আলুর ফলন ভালো দেখা দিয়েছে। ১০ লাখ টাকার আলু বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন রুবেল। তাঁকে দেখে আলু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় অনেকেই।
সম্প্রতি পন্ডিত পাড়ায় গিয়ে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ আল মামুন (রুবেল) ডিলারশিপ ব্যবসার পাশাপাশি ২০২১সালে নিজ উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে আলুর চাষ শুরু করেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেইসবুক ও ইউটিউবের সহায়তা নিয়ে এ বছরে সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করছেন। স্যাভেন ও স্টোরিজ জাতের আলু।
আব্দুল্লাহ আল মামুন (রুবেল) বলেন, আলুর বীজের দাম বেশি নেয়া হচ্ছে কোল্ডস্টোরেজ গুলোতে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে আলুর দাম বেশি হওয়ায় আলুর ঘাটতি পূরণে আলু চাষ করি। জমিতে বছরে তিনটি ফসল ভুট্টা, ধান ও আলু চাষাবাদ করি। আলু চাষ অনেক সহজ, কম সময়ে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য আলু চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকারি সহায়তায় প্রশিক্ষণ ও ন্যায্য মূল্যে বীজ পেলে আরো বেশি চাষাবাদ হবে বলে মনে করেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ আফিসের তথ্য অনুযায়ী সদর উপজেলায় এবার ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি বীজ) উপ-পরিচালক মো. মাসুদ সুলতান জানান, চলতি মৌসুমে চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ আলু বীজ সরবরাহ করছে বিএডিসি, ৩ শতাংশ সরবরাহ করছে বেসরকারি বীজ কোম্পানিগুলো। আর চাহিদার বাকিটা নিয়ন্ত্রণ করছে হিমাগার পর্যায়ের মজুদদাররা হিমাগার সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সরকারি পর্যায়ে বীজ আলুর উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। বিএনডিসির বীজ মান সম্পন্ন। এই কারণে এর চাহিদা অনেক বেশি।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জানান, মো. রিয়াজ উদ্দিন বীজ আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়মিত মনিটরিং চলছে। অনিয়ম পাওয়া গেলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
রংপুর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে বাড়ানো হয়েছে অভিযান। অনিয়ম পেলেই সঙ্গে সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে রংপুরে আলু বীজের চাহিদা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বিএডিসির যোগান মাত্র ২ হাজার ৭৯৭ মেট্রিক টন ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে ৫ হাজার ৮২৫ মেট্রিক টন। আর হিমাগারগুলোতে মজুদ আছে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ বীজ আলুর ঘাটতি রয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। বিএডিসি কেজিপ্রতি বীজ আলু ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো ৭০ থেকে ৮০ টাকা দর নির্ধারণ করলেও ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকদের কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত।