বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০১ অপরাহ্ন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা চায় না শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে পোষ্য কোটা চায় না শিক্ষার্থীরা

শহিদুল্লাহ মনসুর, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। এই কোটার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এ নিয়ে প্রশাসন থেকে বারবার আশ্বাস দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত আসেনি কোনো সমাধান। এরই মাঝে নতুন ব্যাচের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পোষ্য কোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে যৌক্তিক কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এই শিক্ষার্থীদের দাবি- পোষ্য কোটা মূলত একটি অযৌক্তিক ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে এটি বৈষম্যের সৃষ্টি করে। শিক্ষারক্ষেত্রে কোটাভিত্তিক ব্যবস্থা নয়, বরং যোগ্যতার ভিত্তিতে সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন তারা।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পোষ্য কোটা প্রকৃতপক্ষে মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করছে। এর যৌক্তিক সংস্কার হওয়া জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক-কর্মকর্তাদের সন্তানরা তো সমাজের কোন অনগ্রসর গোষ্ঠী নন। সুতরাং তাদের এইরকম একটি অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহণ করা বৈষম্যবিরোধী যে চেতনা তার সাথে সাংঘর্ষিক।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল মাহদি বলেন, ‘যেখানে একজন ভর্তিচ্ছু ৭০ ভাগ নম্বর পেয়েও অনেক সময় সুযোগ পেতে কষ্ট হয়, সেখানে মাত্র ৩৩ ভাগ নম্বর পেয়ে পোষ্য কোটাধারীরা পড়ার সুযোগ পায়। এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।’

পোষ্য কোটার বাতিলের পক্ষে মত প্রদান করেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে পোষ্য কোটা একটা অযৌক্তিক এবং অন্যায্য ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়া উচিত। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। পোষ্য কোটা মেধার বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার মান কমাচ্ছে। যদিও পোষ্য কোটার ভর্তি নির্ধারিত আসনের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়, তারপরেও এই কোটা বাতিল করে ওই আসনগুলোতে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো উচিত।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী অন্যান্য কোটার মতো পোষ্য কোনো কোটা নয়। মুক্তিযোদ্ধা, খেলোয়াড় কিংবা অন্যান্য কোটার মতো ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট সিট সংখ্যার সাথে পোষ্য কোটা সম্পৃক্ত নয়। অর্থাৎ কোনো বিভাগ যদি ৫০ জনের ভর্তি সার্কুলার প্রকাশ করে তাহলে সেখানে মেধার ভিত্তিতে ৫০ জনই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। মূলত এর বাইরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বজনদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এ সুযোগ দেয়। ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন এবং স্বামী-স্ত্রী মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে এ সুযোগ পেয়ে থাকে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2025 Protidiner Kagoj |