বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০১ অপরাহ্ন

অশ্লীলতায় ছেয়ে গেছে বাকৃবি : নেই নজরদারি

অশ্লীলতায় ছেয়ে গেছে বাকৃবি : নেই নজরদারি

রিসালাত আলিফ, বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ক্রমাগত বাড়ছে বহিরাগতদের অশ্লীলতা। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে নিজ ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বৈশাখী চত্বর, আমবাগান, টিএসসি লেকের পাড়, নদীর পাড়, মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের মাঠ বহিরাগতদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এসব স্থানে ক্যাম্পাসের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলছে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা। বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যার পর বসে মাদকের আসর। বিভিন্ন জায়গায় হরহামেশাই পরিত্যক্ত ফেনসিডিলের শিশি ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পোশাক পরিহিত শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে এসে অবাধে জড়াচ্ছে অশ্লীলতায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে প্রায়ই অপ্রীতিকর ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

জানা যায়, প্রতিদিন কয়েকশত দর্শনার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে। ছুটির দিনগুলোতে সংখ্যাটি ছাড়ায় সহস্রাধিক। অনেক দর্শনার্থী অশ্লীলতার অভয়ারণ্য হিসেবে বেছে নেয় ক্যাম্পাসকে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে, অন্যদিকে কেউ হচ্ছেন ইভটিজিংয়ের শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী তাদের ভীতি ও অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন।

কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জয় মন্ডল বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দিনে দুপুরে যে অশ্লীলতা শুরু হয়েছে তাতে আমরা বিব্রত। অনেক সময় আমাদের অবিভাবকরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। তাদেরকে নিয়ে যখন ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখাই, তখন ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এমন অশ্লীলতার সম্মুখীন হয়ে অবিভাবকের সামনে লজ্জিত হয়ে পড়ি। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি থাকলে এমনটা কখনই হতো না।’

প্যারাসাইটোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফারাহ তাসফিয়া বলেন, ‘বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুবই বিব্রতকর। এগুলো শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে। আমার অনেক বান্ধবী বহিরাগতদের ইভটিজিংয়ের শিকারও হয়েছে। নিজ ক্যাম্পাসে এগুলো কিভাবে মেনে নেওয়া যায়? প্রশাসনের নজরদারি বলতে তেমন কিছুই দেখা যায় না।’

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও তা তেমন কার্যকর না। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ফটকে জোরালো কোনো তল্লাশি ব্যবস্থা নেই, যা নিরাপত্তার ঘাটতিকে আরও প্রকট করে তুলছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে বাকৃবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘পরিদর্শনের সময় নিরাপত্তা কর্মীরা এমন কোন ঘটনা দেখলে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিদের্শ দেওয়া আছে’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্বিগ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সকলের জন্য খুবই বিব্রতকর। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মী সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা ওই সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। সামনে প্রক্টরিয়াল বডি আরও নিরাপত্তা জোরদার করবে।’

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2025 Protidiner Kagoj |