বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
শহীদুল ইসলাম:
ফরিপুর সদরপুরে অসহায় পঙ্গু ভিক্ষুক মোঃ জয়নাল ফকির (৫৫) পিতা-মৃত্যু: কুটি ফকির, গ্রাম ঠেংগামারী, ইউনিয়ন কৃষ্টপুর পো: হাটকৃষ্টপুর থানা: সদরপুর।তার ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ হওয়ার চিন্তায় এখন মরন পথযাত্রী। বুধবার (১৮আগষ্ট) এই ভিক্ষুকের নিজ বাড়ীতে গিয়ে জানাগেল এই হ্রদয়বিদারক কাহিনী। কষ্টে দুখে ও শোকে কান্নাও করতে পারছিলো না সে।জয়নাল পেশায় ছিলেন একজন ড্রাইবার। সড়ক দুর্ঘটনায় তার একটি পাঁ সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায় ১৩ বছর আগে।
এক ছেলে এক মেয়ে স্ত্রীসহ বড় অসহায় হয়ে পড়েন তার গোটা পরিবার। এক দিকে সংসারের খরচ অপরদিকে প্রতিদনের ঔষাধ কেনার ৫/৬ শত টাকা জোগার করা তার পক্ষে খুবই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে।
অর্ধাহারে অনাহারে দীর্ঘ পাড় করে জয়নাল। শেষ পর্যন্ত ভিক্ষাবৃত্তির পেশা বেছে নেয় সে।তারও একসময় সামাজিক অবস্হান ছিল তার।,গ্রামের মানুষ একজন ভাল মানুষ হিসাবে বিচারেও ডাকত অনেকে হক কথা বলার কারনে।সেই মানুষটি পঙ্গু হয়ে বড়ই অসহায় হয়ে পড়ে। নিজ এলাকার মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা নেওয়াটা খুবই লজ্জা ও কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়ায়।
লোক লজ্জায় এলাকা ছেড়ে তিনি চলে যান,শিবচর কাঁঠালবাড়িয়ার ঘাট এলাকায় ভিক্ষা করতে। সেখানে তিনি ১০/১২ বছর যাবৎ ভিক্ষা করে সংসার সন্তান বাঁচিয়ে বেস কিছু টাকা পুঁজিও করেন।
একমাত্র ছেলেটির বয়সও ২২/২৫ এ দাড়ায়। মনে মনে ভবিষ্যৎ সুখের আশা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে বাড়ী ঘর দিবেন,একমাত্র মেয়েটিকে ভাল করে বিয়ে দিবেন, আর ভিক্ষাও করবেন না।
এরই ধারাবাহিকতায়, পরিচয় হয়,সদরপুর উপজেলার
১৭ রশি এলাকার মোঃ শাহাবুদ্দিন মাতব্বর পিতা সোনা মিয়া, শিউলি বেগম, কোহিনুর বেগম উভয় পিতা শাহাবুদ্দিন মাতব্বরের সাথে এদের সকলের বাড়ী ১৭ রশি, পো:সদরপুর থানা: সদরপুর এলাকায়।
উল্লেখিতরা, পঙ্গু জয়নাল ফকির বাড়ীতে পূর্ব পরিচয়ের সম্পর্কে বেড়াতে আসতেন মাঝে মধ্যেই। আস্তপ আস্তে প্রতারনার ফাদেঁ ফেলে সবাই মিলে।
জয়নাকও তার স্ত্রীকে ফাঁদেও ফেলে দেয় এই প্রতারক চক্র। গভীর সম্পর্কে গড়ে তুলেন জয়নালের পরিবারের সাথে। সরল বিশ্বাসী জয়নাল প্রতারকদের প্রতরনা বুঝতে পারেনি। উপরন্ত তাদের আপন মনে করেন। পাশা-পাশি প্রতারকদের মাধ্যমে ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাবও গ্রহন করেন।
বাকি জীবন সুখ-শান্তিতে কাটানোর সপ্ন দেখিয়ে, প্রতারকদল ১২ বছরের ভিক্ষা করা নগদ তিন লাখ টাকা তুলে দেন প্রতারকদের হাতে। বাকি টাকা কোন রকম জোগার করতে পারেননি।
এর মধ্যে জয়নালের বাড়িতে আসা যাওয়ার মধ্য দিয়ে উল্লেখিত, মুল প্রতারক মোঃ শাহাবুদ্দীন মাতুব্বর ভিক্ষুক জয়নালের একমাত্র মেয়ের সাথে প্রেমের ফাঁদ ফেলে মেয়েকে বিয়ে করে জামাই বনে যান তিনি।
এখন কোন কিছুতেই আর বাঁধা রইলো না। এর পর জামাই মেয়ের সাথে মিলে পঙ্গু ভিক্ষুকের বাড়ী ভিটা বিক্রি করা আরো তিন লাখ টাকাসহ মোট ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক।
গ্রাম্য শালিশ দরবারে পঙ্গু ভিক্ষুকের হাতে তুলে দেন একটু ভুয়া ভিসা। ভুয়া ভিসায় বিদেশে যাওয়া হলো না ছেলের। ফলে উভয়ের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্কও টিকেনি আর। ভেঙ্গে গেল মেয়ের সংসারও।
ভিক্ষুক জয়নাল ৬ লাখ টাকা উদ্বার করতে এখনও ঘুরছে সকলের দ্বারে দ্বারে। ভিক্ষুক জয়নাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করছেন।
উল্লেখিত, বিষয় গনমমাধ্যম কর্মীরা অভিযুক্ত শাহাবুদ্দীন মাতুব্বরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি সঠিক ভিসা দিয়েছি এরা সময় মত ঔ ভিসায় বিদেশে জাননি। আমি কোন প্রতারনাও করিনি মিথ্যা কথাও বলিনও। টাকাও আত্মাসাৎ করিনি। আমাদের নামে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া।