রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা: র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মতো চাঞ্চল্যকর অপরাধ দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই যে, নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানাধীন সোহাগীডহর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম(৭৪) এর ছেলে নিহত মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। গত ২০/০১/২০১৯ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় পূর্বধলা থানাধীন হোগলা বাজারের ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে ০২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তারাকান্দা থানাধীন কামারগাঁও ইউনিয়নের শালিয়াকান্দা গ্রামে যাওয়ার কথা বলিলে মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) সরল বিশ্বাসে ভাড়া সাব্যস্থ করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদ্বয়কে নিয়ে শালিয়াকান্দা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। ঐদিন রাত অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় তারাকান্দা থানাধীন চিকলি বিলের ব্রীজের উপর পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেল আরোহীদ্বয় প্রস্রাব করার কথা বলে মোটর সাইকেলটি থামিয়ে ধারালো ছোরা ও ডেগার বাহির করে মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) খুন জখমের হুমকি প্রদান করে।
একপর্যায়ে, অজ্ঞাতনামা ০১জন ব্যক্তি বাদীর ছেলে মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) এর পেটে ঘাই মারে পেটের ভুড়ি বের করে ফেলে এবং লাথি মেরে ব্রীজের নিচে ফেলে দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করেন। এ সময়, মেহেদী হাসান গোলাপ এর ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদ্বয় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) এর মোটরসাইকেলটি পানিতে ফেলে দেয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে, স্থানীয় লোকজন মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮)কে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) গত ২৩/০১/২০১৯ খ্রি. তারিখ রাত অনুমান ০৭.৩৫ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কালাম(৭৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৭, তারিখঃ ২৫/০১/২০১৯খ্রি., ধারাঃ ৩৯৪/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) খুনের ঘটনায় বিভিন্ন প্রেন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ০১জন সন্দিগ্ধ আসামীকে গ্রেফতার করে এবং অপর সন্দিগ্ধ আসামী সাইফুল ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ্(২৩)‘ ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাকে পলাতক দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরই ধারাবাহিকতায়, উক্ত ক্লুলেস হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সাইফুল ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ্(২৩)‘কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। উক্ত পলাতক আসামির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ইং ১৫/০৬/২০২৪ তারিখ সময় ভোর অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকায় র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার অতিঃ পুলিশ সুপার জুলফিকার আলী, অতিঃ পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম এবং সহঃ পুলিশ সুপার মুহাঃ জাহিদ হাসান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস আভিযানিক দল র্যাব-১, সিপিসি-২ এর সহায়তায় ডিএমপি ঢাকার উত্তরা, ৪নং সেক্টরের ৫নং রোডস্থ আজোয়া রেস্টুরেন্টের সামনে অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সাইফুল ওরফে খালেদ সাইফুল্লাহ্(২৩), পিতা- মৃত আবুল কাশেম , সাং-কালডোয়ার, থানা-পূর্বধলা, জেলা-নেত্রকোণা‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি মেহেদী হাসান গোলাপ(২৮) হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বেচ্ছায় স্বীকার করে।