শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

আপডেট
ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সে লোপাট দুই হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা

ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সে লোপাট দুই হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা

ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সে লোপাট দুই হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ২ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোম্পানিটির আগের পরিচালনা পর্ষদের সময় ঘটেছে এই ঘটনা। কোম্পানিটির অর্থ লোপাটের অভিযোগ ওঠার পর ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল ‘সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোম্পানি’কে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল সময়ে ফারইস্ট ইন্স্যুরেন্সের যাবতীয় কার্যক্রম নিরীক্ষা করে। গত বছরের মাঝামাঝি ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা হয় আইডিআরএ কার্যালয়ে।

ওই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রায় ২ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। বিগত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ লোপাট করেছেন। এই দুর্নীতির ‘নাটের গুরু’ সাবেক পরিচালক এম এ খালেক, যিনি এখন জেলে। ২০১১ থেকে ২০২১ সাল সময়ে অর্থ লোপাটের ঘটনাগুলো ঘটেছে। শেখ কবীর হোসেনের নেতৃত্বে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্সের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর পরই কোম্পানিটিতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সামনে আসে। বর্তমান পর্ষদ আইনি প্রক্রিয়ায় ওই অর্থ আদায়ে কাজ করছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫-২০১৭ সাল সময়ে ফারইস্টের সাবেক পর্ষদ সদস্যরা ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণা করে ছয় খাত থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ২ হাজার ৩৬৭ কোটি ৩১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৭০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। খাতগুলো হলোু জমি ক্রয় ও উন্নয়ন, মেয়াদি আমানত মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রিসিট (এমটিডিআর) জামানত, প্রতিকূল বিনিয়োগ, কোম্পানি পরিচালনায় অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা, কোম্পানি পরিচালনায় ধারাবাহিকতা না থাকা এবং কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনায় য়ন্ত্রণহীনতা। এর মধ্যে জমি ক্রয় ও উন্নয়নের নামে ৬৬৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং এমটিডিআর জামানত রেখে ঋণের নামে ১ হাজার ৩৩২ কোটি ৩১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফারইস্ট লাইফ রাজধানীর শাহবাগ থানায় চারটি মামলা করেন। পুলিশ মামলাগুলো তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। তবে মামলার শুনানিতে আদালত বলেন, অপরাধের ঘটনাগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তপশিলভুক্ত এবং দুদক তদন্ত করবে। পরে চারটি মামলাই দুদকে পাঠানো হয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দুদক মামলাগুলো তদন্ত করছে। ওই চার মামলায় আসামি ১৯ জন। সাবেক পরিচালক এম এ খালেক চার মামলাতেই প্রধান আসামি। এ ছাড়া আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম এবং সাবেক এমডি ও সিইও মো. হেমায়েত উল্লাহ।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |