বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে সংগঠনটির কর্মী সমর্থকরা। এসময় তারা সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পাশাপাশি তারা আদালতের মসজিদেও হামলা করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সাইফুল ইসলামের বড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরত সনাতনীরা আদালত চত্বরে প্রায় তিনঘণ্টা পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। এরপর তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে অবস্থান নেন। এর মধ্যে আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে দুপক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অনেকে গুরুতর আহত হন।
জানা যায়, শুনানির পর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে চিন্ময়কে পুলিশের প্রিজনভ্যান তোলা হয়। তখন তার সমর্থকরা প্রিজনভ্যানটির ঘেরাও করে ও আটকে রাখে। আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সড়কটিতে পুরাতন পিকআপ ভ্যান দিয়ে পথ রোধ করা হয়। পুলিশ তাদের অনুরোধ করে ও বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলেও তারা পথ অবরোধ করে রাখেন। পুলিশের প্রিজনভ্যানটির চাকা পাংচার করে দেওয়া হয়। এরপর বেলা ২টা ৫০ মিনিটে সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে এবং লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে পুলিশের একটি পিকআপে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় পুলিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, এপিবিএনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সনাতনী ইসকন সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে ধাওয়া দিলে আদালত এলাকা ত্যাগ করার সময় তারা মোটরসাইকেল, গাড়ি ও আদালতের মসজিদ মার্কেটের নিচতলায় চেম্বারকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে। তাদের ইট পাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। লালদীঘি চত্বরের নাসির উদ্দিন নামে একজন পিঠা ব্যবসায়ীর মাথা ফেটে যায়। একপর্যায়ে তারা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপাতে থাকে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ইসকন সমর্থকদের রাম-দা, লাঠিসোঁটা হাতে দেখা গেছে।
এদিকে ঘটনার পর আইনজীবী ও স্থানীয় দোকানিরা মসজিদে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করেন। এসময় তাদের নারায়ে তাকবীর স্লোগান দিতে দেখা গেছে। আর ইসকন কর্মীরা নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।