শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

আপডেট
নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো অর্ধেকের বেশি কারাবন্দির আত্মসমর্পণ

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো অর্ধেকের বেশি কারাবন্দির আত্মসমর্পণ

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো অর্ধেকের বেশি কারাবন্দির আত্মসমর্পণ

জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী : নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ৮২৬ কারাবন্দির মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ৪৪৭ জন নরসিংদী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়া পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জন কারাবন্দি উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ২২ জুলাই ৫ জন, ২৩ জুলাই ১২৯জন, ২৪ জুলাই ১৮৩ জন এবং ২৫ জুলাই ১৩০ জন কারাবন্দি আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়া ২৩ জুলাই ১৯ জন, ২৪ জুলাই বুধবার ৭ জন এবং ২৫ জুলাই ৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে সর্বমোট ৪৭৭ জনকে আটক করা হয়। যা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দি আসামিদের ৫৭.৭৪ শতাংশ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়ে গেছে। এদিকে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া কারাবন্দিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৪৭ জন আত্মসমর্পণ করেছে। লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে ৪১টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা গেছে, নরসিংদী জেলা কারাগারটি শহরের ভেলানগরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। এই ভেলানগর ও জেলখানা মোড়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরেই লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ করছিলেন। শুক্রবারও সেখানে একই রকমভাবে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছিলেন। তবে সেদিন সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের খুব একটা দেখা যায়নি। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হঠাৎ করেই হাজারো জনতা কারাগারের দিকে এগোতে থাকে। তারা গিয়ে সেখানে প্রথমে ইট-পাটকেল, পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। হামলাকারীদের প্রায় সবার হাতে লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এ সময় প্রাথমিকভাবে কারারক্ষীরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিন্তু একপর্যায়ে কারারক্ষীরা পিছু হটে। তখন হামলাকারীরা কারাগারের দুই দিকের ফটক অনেকটা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় হামলায় চার কারারক্ষী গুরুতর আহত হয়। পরে কারারক্ষীরা নিরুপায় হয়ে জেলখানার ভেতরে ঢুকে নিজেদের রক্ষা করেন। জেল কোড অনুযায়ী, গুলি করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা মূল কারাগারের ভেতরে ঢুকে সেলগুলো শাবল ও লোহার জিনিসপত্র দিয়ে ভেঙে কয়েদিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিছু কারারক্ষীর কাছ থেকে চাবি নিয়েও সেলের তালা খোলা হয়। হামলা ও অগ্নিসংসোগে কারাগার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অফিস কক্ষ, কনডেম সেল, রান্নাঘর, খোলা চত্বর সব জায়গায় তাণ্ডবের চিহ্ন। দরজা-জানালাগুলো ভেঙে গেছে, দেয়ালে দেয়ালে পোড়া চিহ্ন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |