শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন

আপডেট
বিক্রির কথা শুনলেই অঝোরে কাঁদে ২০ মণের লালবাবু

বিক্রির কথা শুনলেই অঝোরে কাঁদে ২০ মণের লালবাবু

ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এবার কুরবানির হাট মাতাবে ২০ মণ ওজনের লালবাবু। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার শিমরাইল গ্রামে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে পাকিস্তানি শাহিওয়াল জাতের গরুটি পালন করে আসছেন মো. আব্দুল হান্নান। এই খামারির পালিত একটি গাভী থেকে জন্ম নেয় লালবাবু। এ বছরের পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন ২০ মণের লালবাবুকে। পরম যত্ন আর পরিচর্যায় লালন করা ওই গরুটি লাল রঙের হওয়ায় তার নাম রেখেছেন ‘লালবাবু’।

ডিশ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল হান্নান ৩ বছর ৫ মাস বয়সী গরুটির দাম হেঁকেছেন ১২ লাখ টাকা। গরুটির ওজন প্রায় ২০ মণ। এদিকে বিশালাকার গরুটিকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে। গরুটিকে দেখতে বিভিন্ন গ্রামের লোকজনসহ ব্যবসায়ীরা আসছেন এবং দাম করছেন। তবে বিক্রির কথা শুনলেই অঝোরে কাঁদে লালবাবু। গরুর মালিক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘নিজের সন্তানের মতোই লালবাবুকে লালন-পালন করেছি। এই গরমে কারেন্ট (বিদ্যুৎ) না থাকলে গভীর রাত পর্যন্ত পাঙ্খা (হাতপাখা) দিয়ে লালুকে বাতাস করেছি। তাই বিক্রি করে দেওয়ার কথা শুনলেই লালবাবু কাঁদে। তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে। এতে আমারও কষ্ট লাগে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে খামারির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, লালবাবুর পরিচর্যা করছেন হান্নান। এ সময় তার ছেলে লুৎফর রহমান সোহেল ফিতা দিয়ে লালবাবুর উচ্চতা মাপছেন। ৮’শ কেজি বা ২০ মণ ওজনের লালবাবুর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ফুট ও উচ্চতা ৬ ফুট। খামারি আব্দুল হান্নান বলেন, শখের কারণে বড় করেছি গরুটি। আরও আগে থেকেই গরু পালার শখ আমার। কিন্তু এখন আমি অসুস্থ। শরীরটা আর কুলায় না। তাই বিক্রি করে দেওয়ার নিয়ত করেছি। গরুটি বিক্রির জন্য দাম চেয়েছি ১২ লাখ টাকা।

তিনি আরও বলেন, আমি প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়ানোর মাধ্যমে লালুকে বড় করেছি। তার শারীরিক কোন সমস্যা হলে বড় ডাক্তার(উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার) চিকিৎসা দিয়েছেন এবং খোঁজখবর রেখেছেন। নিজের জমির ঘাস বাদে গরুটির পেছনে দৈনিক ১ হাজার টাকারও বেশি খরচ হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে গরুটিকে প্রতিদিন ২-৩ বার গোসল করাতে হয়। গরুটিকে বাতাস করার জন্য ফ্যান লাগানো হয়েছে। এই গরুটিসহ খামারের বাকি গরুগুলোকে ভুষি, ভুট্টা, ঘাস,খড় ও পাকা কলা খাওয়ানো হয়।হান্নানের প্রতিবেশী ভাতিজা সবুজ মিয়া বলেন, লালবাবুকে চাচা অনেক কষ্ট করে লালন-পালন করেছেন। এমন বড় গরু আমি জীবনেও দেখিনি। এটা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু হবে।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘শাহিওয়াল জাতের গরু আকারে অনেক বড় হয়। সাধারণত খরচের কথা বিবেচনা করে খামারিরা সচরাচর গরু এত বড় করে না। এক্ষেত্রে আব্দুল হান্নান লালবাবুকে বড় করে সফল হয়েছেন। গরুটিকে যেন কোন প্রকার ক্ষতিকারক খাবার এবং স্টেরয়েড প্রয়োগ করা না হয় এ বিষয়ে গরুর মালিককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।’

 

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |