মোঃ আব্দুল মান্নান, স্টাফ রিপোর্টার : গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ময়মনসিংহের ফুলপুর সরকারি কলেজ রোডে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়কটির এক পাশে খড়িয়া নদী ও অন্য পাশে দিউ গ্রাম। ওই গ্রামে ফুলপুর সরকারি কলেজ ছাড়াও ফুলপুর মহিলা কামিল মাদরাসা ও সরকারি বেসরকারি প্রায় ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসী প্রতিনিয়ত এদিক দিয়ে চলাচল করে থাকেন। প্রবল বৃষ্টির সময় গ্রামের পুকুর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে উপচে পড়া পানি এই কলেজ রোডের উপর দিয়ে গড়িয়ে খড়িয়া নদীতে নামে।
দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলতে থাকায় ও সংস্কার কাজ না করায় রোডটি এমনিতেই দুর্বল ছিল। এর আস্তরণ ও ইট সুরকি খসে গিয়েছিল। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার পানিতে রোডটি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। জায়গায় জায়গায় ভেঙে বড় বড় খাদ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের উপচে পড়া পানি সড়ক বেয়ে খড়িয়া নদীতে নামছে। সড়ক থেকে খড়িয়ার ঢালে যেখানে পানি গিয়ে পড়ছে এরকম কয়েকটা স্পটে বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে এবং এতে যে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে তা সড়ককে গ্রাস করতে যাচ্ছে।
আরেকটি বিষয় হলো, ঢাকা-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে কলেজ রোডটি অনেকটা নিচু। মহাসড়কের পানিও গড়িয়ে ওই রোডে গিয়ে নামে। দিউ এলাকার পানি খড়িয়া নদীতে নামার আর কোন বিকল্প পথ নেই বললেই চলে। বৃষ্টির পানির সাথে ওই এলাকার ময়লা আবর্জনা ও টয়লেটের উপচে পড়া দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানিও এদিক দিয়েই খড়িয়াতে নামছে। এভাবে কলেজ রোডটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া বালিয়া মোড় ও শিববাড়ি রোডসহ পৌরসভার বেশ কয়েকটি রোডের অবস্থা খুবই নাজুক।
এদিকে, পরিবেশগত সমস্যায়ও কলেজ রোডটি আক্রান্ত। ওই রোডের মাথায় একটি জামে মসজিদ রয়েছে। ওই মসজিদ সংলগ্ন স্থানে মাছের বাজার বসে। মাছ ধোয়ার পানি ছিটকে কোন কোন সময় মুসল্লি ও শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের গায়ে গিয়ে পড়ে। আর মাছ বিক্রি করে চলে যাওয়ার পর যেসব উচ্ছিষ্ট পড়ে থাকে ওখানে এক ধরনের দুর্গন্ধ বিরাজ করে। একটু রোদ পেলে ওই দুর্গন্ধের তেজ আরও বেড়ে যায়। যা চলাচলের সময় পথচারীদের নাকে গিয়ে বারি খায় বা ধাক লাগে। এমতাবস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীসহ পথচারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলপুর পৌরসভার মেয়র মি. শশধর সেন বলেন, ড্রেন করতে চাইলে মানুষ জায়গা দিতে চায় না। পানি আটকে রাখে। আমরা কি করবো? কাজ করার সাধ আছে কিন্তু সেই হারে বরাদ্দ পাচ্ছি না। কিছু বরাদ্দ পেয়েছি। ময়লা আবর্জনা ফেলানোর জন্য পাঁচ একর জমি কেনা হয়েছে। এছাড়া আমুয়াকান্দা, কাজিয়াকান্দা ও শিববাড়ি রোডে ড্রেন করা হবে। ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেখা যাক কতটুকু কি করতে পারি।