সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’

কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’

কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্ত আন্দামান সাগর এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি ধীরে ধীরে আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ২৩ অক্টোবর শক্তি বাড়িয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ তৈরি হবে এবং পরদিন ২৪ অক্টোবর সকালে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করবে। ভারতের আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ২৪ তারিখ উপকূলে হাওয়ার গতিবেগ থাকবে সম্ভাব্য ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। সেটা বেড়ে ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়ও হতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডানা’। ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে কাতার। এই ‘ডানা’ নামের অর্থ মুক্ত বা স্বাধীনতা। তবে এই ঘূর্ণিঝড় কোথা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে অথবা কোথায় এটির ল্যান্ডফল হবে সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। সাগরে নিম্নচাপের সময় বাতাসের প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত বায়ুমণ্ডলীয় উত্তাল অবস্থাকে সংক্ষেপে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের এই একটানা ঘূর্ণায়মান গতি যখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছায়, তখনই এর নামকরণ করা হয়। আটলান্টিক মহাসাগর ও এর আশপাশের অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারে উঠে গেলে নিম্নচাপ ঝড়ে পরিণত হয়। আর এ সময়ই ঘূর্ণিঝড়টিকে একটি নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটির অধীনে মোট ৫টি আঞ্চলিক সংস্থা তাদের স্ব স্ব অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে। এগুলো হলো- ইএসসিএপি (ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক) বা ডব্লিউএমও (বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা) টাইফুন কমিটি, ডব্লিউএমও বা ইএসসিএপি প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোন, আরএ (রেজিওনাল অ্যাসোসিয়েশন) ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি, আরএ-৪ হারিকেন কমিটি, আরএ-৫ ট্রপিক্যাল সাইক্লোন কমিটি। ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে ১৩টি দেশ। সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ওমান, ইরান, সৌদি আরব, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার। ডব্লিউএমওর অংশ হিসেবে উত্তর ভারতীয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে থাকে- আরএসএমসি, ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সিস্টেমস (টিসিডব্লিউএস) ও ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি)।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের পেছনে মূল কারণ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে জনসাধারণের সতর্কতা। এই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে বাতাসের গতিবিধি ও আসন্ন দুর্যোগ নিয়ে গবেষণা করা হয়ে থাকে। এই গবেষণায় ঝড়ের তীব্রতা এবং একাধিক ঝড়ের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে এগুলোর নামকরণ। এদিকে রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরির বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে। তিনি বলেন, তবে এটি (লঘুচাপ) কোনদিকে অগ্রসর হবে সেটি স্পষ্ট নয়। যদি শক্তিশালী হয় তবে আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |