শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন

আপডেট
কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রত্যাশী জুনায়েদ আনসারী

কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রত্যাশী জুনায়েদ আনসারী

স্টাফ রিপোর্টারঃ
নাট্যশিল্পী, গায়ক এবং এক শিল্প-সংস্কৃতিমনা জোনায়েদকে নিয়ে কিছু বলার নেই। গর্ব করার মতো একটা পরিবারে জন্ম জোনায়েদের । আদতে যাপিত জীবনে কী পেয়েছে তা খুব কাছ থেকে অনুভব করার মত। ইতিহাসের মতো শুধু পৃষ্ঠা উল্টাই…ওর নানা ভাষাসৈনিক আজিম উদ্দিন আহমেদ। মহান ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য ছাত্রত্বের উপর আজীবন নিষেধাজ্ঞা দেয় নেত্রকোণা আঞ্জুমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জারি করা হয় হুলিয়া। ২০১৪ সালে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ হাসান, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ৬১ বছর পর ফিরে পান ছাত্রত্ব। ২০১৭ সালে ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন কলেজের বাংলা ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে সম্মাননাও প্রদান করা হয়। ছিলেন বাংলাদেশ সংগ্রাম পরিষদ জারিয়া-পূর্বধলা-নেত্রকোণার চেয়ারম্যান।

দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আনসার কমান্ডার জমির উদ্দিন সরকার। মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছেন বড় পুত্র সন্তানকে নিয়ে। ছিলেন শ্রীবর্দী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

ছোট চাচা মরহুম শাহাদাত হোসেন ছিলেন যুবলীগ কর্মী। ৯৬-এ শ্লোগানরত অবস্থায় বিএনপি-জামাত কুঁপিয়ে রক্তাক্ত করলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। যাঁকে দেখতে যান মাননীয় শেখ হাসিনা।

বাবা মোঃ শাহজাহান আনসারী শ্রীবর্দী যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং শ্রীবর্দী বাজার শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। আওয়ামী লীগ হওয়ার কারণেই জোনায়েদের বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে নিঃস্ব করে দেয়া হয় এক রাতের অন্ধকারে।

মুক্তিযোদ্ধা অথবা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানেরা নাকি নানা সুযোগ সুবিধায় ডুবে আছে। অথচ জোনায়েদকে দেখি একই পাঞ্জাবি, পরছে তিন বছর ধরে। এক শার্ট, এক প্যান্ট দিনে পরে রাতে ধুয়ে আবার দিনে পরছে। সারাদিন পেটে কিছু না জুটলেও বলছে না কাউকে। ক্ষুধা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিলের কণ্ঠে ঝরাচ্ছে অগ্নিকথা। জীবনের কঠিন যুদ্ধে লিপ্ত থেকেও ছাড়ছে না সংস্কৃতি। ছাড়ছে না ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ করতে গেলে ভাই লীগ করতে হয়,সেটা ও জানে না। জানে না বলেই ঢের পিছিয়ে। এমন অভিমত অনেকের।

এক বোন ঢাবিতে, এক বোন বাকৃবির শিক্ষার্থী।
জোনায়েদ ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ থেকে ইন্টার পাশ করে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। অথচ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ভাগ্যে ছাত্রলীগের কোন পদ জোটেনি। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্লোগান মাস্টার জোনায়েদ। বিপক্ষ শত্রুকে কাঁপিয়ে দিতে জানে শ্লোগানে শ্লোগানে। সম্মুখ যোদ্ধা হওয়ার তেজ দেখা যায়, চোখে মুখে।

নানা, দাদা, বাপ চাচাদের আওয়ামী লীগে সংগ্রামী রাজনৈতিক ইতিহাস থাকার পরও সবকিছু ঝাপসা দেখি মাঝেমাঝে। এখন হয় তো ইতিহাস দেখে কাউকে পদ দেয়া হয় না। পদ জোটে গ্রুপিং-এ, পদ জোটে চাটুকারিতায়, পদ জোটে অর্থে।

জোনায়েদের এইসব নেই। সেজন্যেই ওর পাওয়া না পাওয়া দেখে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। বহুরূপী নাট্য সংস্থার হীলু চাচার কাছ থেকে অভিনয়, খোকা চাচার কাছে শেখা চিকা মারা ও জানে। লালনের গান বাঁধতে জানে কণ্ঠে। ওকে শুধু বলি- জীবনে কিচ্ছু না পেলেও রাজনীতি, সংস্কৃতির যে নেশা জোনায়েদকে পেয়ে বসেছে তা যেন না ছাড়ে। কিছু মানুষ থাকুক গোপন ব্যথা নিয়ে। জরাজীর্ণ জীবনের বিষাদ নিয়ে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |