রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তিন বছরে ৪ লবিং ফার্মের ফসল: আইজিপি

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তিন বছরে ৪ লবিং ফার্মের ফসল: আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার নেপথ্যে তিন বছর ধরে বাংলাদেশিদের একটি চক্রের নিয়োগ দেওয়া চারটি লবিং ফার্ম কাজ করেছে। এসব বাংলাদেশি অবয়বে বাঙালি হলেও তারা প্রকৃত বাঙালি না। তারা আর্টিফিসিয়াল বাঙালি। তারা দেশ ও দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিকভাবেই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

‘৬৯-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু দুটি বাদে সব আসন পেলেন, সেবারও ২৮ শতাংশ ভোট দেয়নি। এই ২৮ শতাংশ হলো আর্টিফিসিয়াল বাঙালি।’

বৃহস্পতিবার রাতে ‘যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি’র উদ্যোগে নিউইয়র্কের গুলশান ট্যারেসে এক নাগরিক সংবর্ধনায় বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘে পুলিশপ্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র ইউনিটের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ দলটির নেতাকর্মী, ব্যবসায়ীসহ বাংলাদেশিরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা ও র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা স্লোগান দেন।

আইজিপি বলেন, ‘আজকে আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি, যুক্তরাষ্ট্রের বুকে দাঁড়িয়ে আছি। আমি এই দেশে অনেকবার এসেছি, এখানে লেখাপড়া করেছি, চাকরি করেছি। সেই যুক্তরাষ্ট্র আমাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাকে তাদের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমি পশ্চিমা ভাবধারা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী একজন মানুষ। সেই মূল্যবোধটি হচ্ছে, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ। মানবিকতা ও মানবাধিকারের মূল্যবোধ। আমি তাদের স্বাধীনতায়ও বিশ্বাসী। আমি মানবিকতা ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করি, কিন্তু আমার বিরুদ্ধেই এটা হলো।

বেনজীর আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কি জানেন? সেটা একটি মজার বিষয়। তারা বলছে, ২০০৯ সাল থেকে নাকি দেশে ছয়শ লোক গুম হয়েছে। র‌্যাব নাকি গুম করেছে। আমি ভাই ২০০৯ সালে র‌্যাবে ছিলাম না, ২০১০ সালেও র‌্যাবে ছিলাম না (হাসতে হাসতে বলেন), আমি ২০১১, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালেও ছিলাম না। আমি র‌্যাবে ২০১৫ সালে ছিলাম। যদি আমাকে ছয়শ লোকের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তাহলে ওই সময় যারা ছিলেন, তাদের কী হবে? বিষয়টা কী এরকম বেটা তুই করোনি, তোর দাদা করেছে, এই জন্য তুই দায়ী?’

আইজিপি বলেন, ‘আমি এজন্য আমেরিকান সরকারকে দায়ী করব না। কারণ হচ্ছে, এটা ষড়যন্ত্রকারীদের তিন বছরের ফসল। চারটি লবিং ফার্মকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি ফার্মকে ২৫ মিলিয়ন (ডলার) করে দেওয়া হয়েছে। এটা একশ মিলিয়নের প্রজেক্ট। এই নিষেধাজ্ঞা হলো তার ফলাফল। এর সঙ্গে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি আমেরিকার সরকারকেও কোনো দোষ দেব না, দায়ী করব না। আমেরিকান নাগরিকরা তো লবিং ফার্ম নিয়োগ করেনি। কারা এই লবিং ফার্ম নিয়োগ করেছে, তা ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে। তারা কারা? তারা তো আমেরিকান লোক না, এখানে তারা বসবাসও করে না। তাই আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। বরং আমি যেটা মনে করি, আমাদের সঙ্গে আমেরিকানদের একটা শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। তাদের নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের নাগরিকদের সম্পর্ক রয়েছে।’

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, তখন আমি আমেরিকায় চাকরি করি। তাহলে তখন তারা আমাকে বের করে দিল না কেন?’

প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |