মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন

আপডেট
বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের আল্টিমেটাম পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম নওয়াব হাবিবুল্লাহ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ,হত্যা মামলায় গ্রেফতার কাওরাইদে রেল লাইনের উপর ঝুঁকিপূর্ন অবৈধ বাজার টঙ্গীতে সাংবাদিকের মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত ৩ আসামি গ্রেফতার খাগড়াছড়িতে ডিমের পুষ্টিগুণ বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত জয়পুরহাটে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় জীবিকা ও নিরাপত্তা উন্নয়ন প্রকল্পের অবহিতকরণ নিম্নচাপে পরিণত সাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপ, আরও ঘনীভূত হওয়ার আভাস দোহারে প্রশাসনের বিশেষ অভিযানে জেল জরিমানা আদালতে কাঁদলেন ব্যারিস্টার সুমন, বললেন ‘সরি’
এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় ৯ বছর !

এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় ৯ বছর !

‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ৩.৭৭ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের জন্য দুই বছর (২০১৩-২০১৫) সময় বরাদ্দ ছিল। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে প্রায় ৯ বছর। তারপরও বাস্তবায়ন করা যায়নি প্রকল্পটি। এ অবস্থায় প্রকল্পের সব কাজ শেষ করতে আরেক দফায় সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। বাস্তবায়ন মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যয়ও। ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্পের বর্তমান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৫৯ কোটি টাকা।

এদিকে দফায় দফায় প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানোয় বাস্তবায়নকারী সংস্থা খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার আওতাধীন খুলনা শিপইয়ার্ড সড়কের প্রস্থ ৭ থেকে ১২ মিটার। সেটি ১৮.৩০ মিটারে উন্নীত করার লক্ষে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। ‘খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি জুলাই ২০১৩ থেকে জুন ২০১৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু যথাসময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে দুই বছরের প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ঠেকছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সবশেষ আজ (৮ নভেম্বর) একনেক সভায় ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে প্রকল্পটির মেয়াদ আরেক দফায় বাড়ানো হয়েছে।

আপনার তথ্যের প্রয়োজন হলে খুলনা আসতে হবে না হয় আপনাকে লোক পাঠাতে হবে। আমি এক লাইনে কোনো উত্তর দিতে পারব না। এটা নিয়ে বলতে হলে গত ১০ বছরের হিস্ট্রি বলতে হবে। এর বেশি কিছু জানতে হলে পিডির সঙ্গে কথা বলুন। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. সাবিরুল আলম
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরে বিশেষ সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়ায় ১২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

 

এই বিশেষ সংশোধনের আগে প্রকল্পটি দুইবার সংশোধন করে ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে বাস্তবায়ন মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এরপর প্রকল্পটি বিশেষ সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় ও বাস্তবায়ন মেয়াদ বাড়ানো হয়। বিশেষ সংশোধনের পর প্রকল্পটি আবারও ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে একবার সংশোধন করা হয়। প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন মেয়াদের সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৯ কোটি টাকা। কিন্তু এ মেয়াদেও প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় আজকের একনেক সভায় ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. সাবিরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আপনার তথ্যের প্রয়োজন হলে খুলনা আসতে হবে না হয় আপনাকে লোক পাঠাতে হবে। আমি এক লাইনে কোনো উত্তর দিতে পারব না। এটা নিয়ে বলতে হলে গত ১০ বছরের হিস্ট্রি বলতে হবে। এর বেশি কিছু জানতে হলে পিডির সঙ্গে কথা বলুন।’

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. আরমান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ৩.৭৭ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন ও প্রশস্ত করার কথা রয়েছে। প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা ছিল। এই জটিলতার কারণেই আমাদের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে দেরি হয়েছে। সড়কটি শহরের ভেতরে হওয়ায় দুই পাশে অনেক ভবনসহ শিল্প-কারখানা ছিল। সেগুলো অপসারণ করতে অনেক সময় লেগেছে। এছাড়া অনেকে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সেগুলো নিষ্পত্তিতে অনেক সময় লেগেছে।

যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে এর প্রভাব দেশের অর্থনীতির উপর পড়ে। কারণ একটি প্রকল্পের ডিপিপি যখন তৈরি করা হয়, তখন লক্ষ্যই থাকে এই প্রকল্পটি থেকে কিছু উপকার আসবে। প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় দেশ সেই উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যয় বাড়ার কারণে সরকারের অর্থনৈতিক চাপ বাড়ে। এজন্য যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারলে সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতার আওতায় আনতে হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভবন অপসারণ করে জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের জমি বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন আমরা অবকাঠামোর কাজ শুরু করতে পারব। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৭.৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।’

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (পরিকল্পনা শাখা-১) তারিক হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জমি অধিগ্রহণ বিলম্ব হওয়া ও করোনার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এতো সময় লেগেছে। এছাড়া একটি টেন্ডারে সর্বনিম্ন প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। পরে মন্ত্রণালয় সে টেন্ডার বাতিল করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে রিটেন্ডার হয়ে আসতেও সময় ক্ষেপণ হয়েছে।

প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছিল কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছিল কিনা, সেটা আমার মনে নেই। তবে এই প্রকল্পে ফিজিবিলিটি স্টাডি না থাকলেও সরকার নতুন পরিপত্রে বলে দিয়েছে, কোনো প্রকল্পের ক্ষেত্রে যদি জমি অধিগ্রহণ থাকে তাহলে অধিগ্রহণের জন্য আলাদা প্রকল্প নিতে হবে। এখন বিষয়টা সহজ হয়ে গেছে। আর এই প্রকল্পে ফিজিবিলিটি স্টাডির কোন সমস্যা ছিল না, শিল্প-কারখানার কারণে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা ছিল।

এ প্রকল্পের আওতায় ৩.৭৭ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন ও প্রশস্ত করার কথা রয়েছে। প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা ছিল। এই জটিলতার কারণেই আমাদের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে দেরি হয়েছে। সড়কটি শহরের ভেতরে হওয়ায় দুই পাশে অনেক ভবনসহ শিল্প-কারখানা ছিল। সেগুলো অপসারণ করতে অনেক সময় লেগেছে। এছাড়া অনেকে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং সেগুলো নিষ্পত্তিতে অনেক সময় লেগেছে।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. আরমান হোসেন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনের পর দিন প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হচ্ছে না। এ সমস্যাটা শুধুমাত্র একটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে হচ্ছে বিষয়টি এ রকম নয়। বেশিরভাগ প্রকল্পেই এ সমস্যা বিরাজমান।

তিনি বলেন, প্রকল্পের এই বিষয়গুলো আমি নিজেও লিখেছি। এগুলোতে কেউ কর্ণপাত করে না। যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে এর প্রভাব দেশের অর্থনীতির উপর পড়ে। কারণ একটি প্রকল্পের ডিপিপি যখন তৈরি করা হয়, তখন লক্ষ্যই থাকে এই প্রকল্পটি থেকে কিছু উপকার আসবে। প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় দেশ সেই উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্যয় বাড়ার কারণে সরকারের অর্থনৈতিক চাপ বাড়ে। এজন্য যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারলে সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতার আওতায় আনতে হবে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |