শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন

আপডেট
বেড়েছে আদার দাম, উচ্চমূল্যে অপরিবর্তিত পেঁয়াজ-রসুন

বেড়েছে আদার দাম, উচ্চমূল্যে অপরিবর্তিত পেঁয়াজ-রসুন

নিজস্ব সংবাদদাতা : পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র দুদিন বাকি। ঈদকে সামনে রেখে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে আদার কেজি পৌঁছেছে ৩০০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ও রসুনের উচ্চমূল্য রয়েছে অপরিবর্তিত। এছাড়া ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচসহ বেশকিছু সবজি এবং ডিমের দামও বেড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদকে কেন্দ্র করে এ সব পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন ঈদ নয়, আগে থেকেই এ সব পণ্যের দাম বাড়তি। শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ২২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ৩০০ টাকা, ভারতীয় আদা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে পাঁচ টাকা, ভারতীয় আদার দাম ২০ টাকা এবং চায়না আদার দাম ৪০ টাকা বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিক্রেতা আলাউদ্দীন বলেন, ‘আগে থেকেই পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম বাড়তি ছিল। তবে এটাও সত্য, কোরবানির ঈদে এ সব পণ্যের দাম বাড়ে। সাইফুল নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘কোরবানির ঈদে আদা, রসুন, পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। কারণ এ সময় এ সব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। তার মানে এই না, আমরা দাম বাড়িয়ে দেই। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যায় বলেই আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। বিস্ময় প্রকাশ করে আজাদ রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আদার দাম ৩০০ হয়ে গেলো! রসুন-পেঁয়াজের দামও বেশি। ব্যবসায়ীরা খালি উপলক্ষ খোঁজে। এখন ঈদের সময় তাই দাম বাড়িয়েছে।’

আদা, রসুন, পেঁয়াজ ছাড়াও বেশকিছু সবজির দাম বেড়েছে। আজ টমেটো ১০০ টাকা, দেশি গাজর ৯০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ১০০-১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০-১০০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা করে। এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে চায়না গাজর, সাদা ও কালো গোল বেগুন, করলা, পেঁপে, পটল, ধুন্দল, ঝিঙা, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা, লাউ ও চাল কুমড়ার। এর মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ধনেপাতার দাম বেড়েছে ৫০ টাকা এবং কাঁচা মরিচের দাম ৪০ টাকা। এ দুটি পণ্যই গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে।

সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিক্রেতা কামাল বলেন, ‘এগুলো কাঁচা জিনিস, তাই দাম নিয়মিত উঠা-নামা করে। ঈদের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনও সম্পর্ক নাই। আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১ হাজার ২০০-২ হাজার ৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০-৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০-৫০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১ হাজার ৬০০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা, কৈ মাছ ২৬০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০-১ হাজার ২০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, বেলে ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১০০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আজ ব্রয়লার মুরগি ও লেয়ার মুরগির দাম সামান্য বেড়েছে। তবে দাম বাড়েনি কক ও দেশি মুরগির। এগুলো উচ্চমূল্যে অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৮৮ টাকা, কক ২৯৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।

জানতে চাইলে চিশতিয়া চিকেন হাউজের বিক্রেতা বলেন, ‘ঈদের আগে আর মুরগির দাম কমার সম্ভাবনা নাই। যদি বেচাকেনা ভালো না হয় তাহলে চাঁদরাতে দাম কমতে পারে। এছাড়া দাম এ রকমই থাকবে। এদিকে কোরবানির ঈদ প্রায় চলে আসলেও কমেনি গরু ও খাসির মাংসের দাম। পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও। আজ গরুর মাংস ৮০০ আর খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির লাল ডিম প্রতি ডজন ১৬০ টাকা, সাদা ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সাদা ডিমের দাম প্রতি ডজনে পাঁচ টাকা, লাল ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়েছে।

পেঁয়াজ, আদার দাম বাড়লেও এ সপ্তাহে মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আজ প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মুসর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |