শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন

আপডেট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির আকার বাড়ল থানায় আগত একজন ব্যক্তিও যেন সেবা বঞ্চিত না হন সেটা নিশ্চিত করতে হবে: নয়া ডিএমপি কমিশনার সরকার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অপহরণের ৭ দিন পর যুবক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ বিচারের পর আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে : ড. ইউনূস রাজউক কর্মকর্তার সম্পদের পাহাড় সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত : প্রধান উপদেষ্টা কালীগঞ্জে গড়ে উঠেছে হারিয়ে যাওয়া মৃৎশিল্প কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নিয়োগ-২০২৫ এর লিখিত পরিক্ষা সংক্রান্তে ব্রিফিং
দেশ সেরা প্রাথমিক শিক্ষিকা কুতুবদিয়ার মুক্তা

দেশ সেরা প্রাথমিক শিক্ষিকা কুতুবদিয়ার মুক্তা

আজিজুলহক আজিজ,কুতুবদিয়া: এবার দেশ সেরা প্রাথমিক সহকারি শিক্ষিকার খ্যাতি অর্জন করে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মাননা গ্রহণ করেছেন মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার  আকবর ডেইল ইউনিয়নের শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কাইমুল হুদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষিকা শমসের নেওয়াজ মুক্তা।  বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেলা ১১টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ব্যাবস্থাপনায় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ প্রদান এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে নিজ হাতে এই পুরুস্কার তোলে দেন।
ইতিপূর্বে তিনি উপজেলা, জেলা, ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে এবার দেশ সেরার খেতাব জিতে নেন। উল্লেখ্য, শমসের নেওয়াজ মুক্তার চাকুরিতে প্রথম যোগদান ২০০৭ সালে।  ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও জেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার খেতাব অর্জন করেছিলেন। অধিদপ্তর কর্তৃক সিলেক্টেড হয়ে ” শ্রীলংকা সফর”ও সম্পন্ন করে এসেছেন ২০১৬ সালে। শমসের নেওয়াজ মুক্তা  শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বরাবরই অবদান রেখে চলেছেন নিজ কর্মক্ষেত্রে,  উপজেলা এবং জেলায়। তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয়  শিক্ষা সপ্তাহ’০৯ এ আন্তঃপিটিআই সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার জেলা হতে নজরুল সঙ্গীত ও লোকনৃত্যেও প্রথম স্থান অর্জন করে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন।
এছাড়াও  উপজেলায় শিক্ষা ও চাকুরিতে অবদান রাখার জন্য পেয়েছেন “জয়িতা’১৩ সম্মাননা। উপজেলার  সকল সীমাবদ্ধতাকে জয় করে নিজ উদ্যোগে করোনাকালীন প্রাথমিক শিক্ষায় অবদান রাখার জন্য আইসিটি ডিভিশনের এটুআই কর্তৃক নির্বাচিত হয়েছেন  কক্সবাজার জেলার প্রথম আইসিটি অ্যামবাসেডর(প্রাথমিক,২৯শে নভেম্বর’২০) এছাড়াও শিক্ষাদানে এবং ঝরে পড়া রোধকল্পে তিনি নতুন এক ধারা অব্যাহত রাখার প্রয়াসে নিত্য-নতুন উদ্ভাবনী নিয়ে  কাজ করে এসেছেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় পেয়েছেন “সেরা উদ্ভাবক” স্বীকৃতি (১-মে’২৩)। অংশ নিয়েছেন বিভাগীয় “ইনোভেশন শোকেসিং’২৩” এ। পেয়েছেন ব্লেনডেড শিক্ষায় ডিজিটাল একসেস ও শিক্ষকের সক্ষমতা শীর্ষক সম্মেলনে  বিভাগীয় শিক্ষক সম্মাননা।
দ্বীপের উপজেলার সকল প্রতিকূলতাকে জয় করে শিক্ষকতা পেশাকে ধারন করে  তিনি এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে চলেছেন অবিরত। অডিশন দিয়েছেন প্রাথমিক  শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন বাংলাদেশ কভিড-১৯ স্কুল সেক্টর প্রকল্প ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ কর্তৃক যৌথভাবে ডিজিটাল কন্টেন্ট উন্নয়ন ও টেলিভিশন পাঠদানে। ধারাবাহিক ওয়ার্কশপে মেধার স্বাক্ষর রেখে নির্বাচিত হয়েছেন স্ক্রিপ্ট রাইটিং ও সংসদ টেলিভিশনে পাঠদানের জন্য। তাঁর উপজেলায় তিনি প্রশিক্ষণ পরিচালনাতেও একজন মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে রেখে চলেছেন অগ্রণী ভূমিকা।   শিক্ষা ও শিশুর মানসিক বিকাশ” নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা বই ও গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ,  ছড়া ও কবিতার যৌথ কাব্যগ্রন্থ।
জানা যায়, মুক্তা শৈশব থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে ছড়িয়েছেন তাঁর দ্যুতি। পেয়েছেন “শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী’৯৬” পুরষ্কার এবং “শ্রেষ্ঠ গার্লস গাইড”০২ পুরষ্কার। দ্বীপ উপজেলার সাংস্কৃতিক আবহে পরিবর্তনের ব্রতকে সামনে নিয়ে তিনি বর্তমানেও কুতুবদিয়া শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। দীর্ঘ সময় ধরে করে চলেছেন বিভিন্ন প্রোগ্রাম পরিচালনা ও উপস্থাপনা। তাঁর শিক্ষার্থীরাও উপজেলা, জেলা এবং বিভাগে রেখে চলেছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। শমসের নেওয়াজ মুক্তা যেখানেই কাজ করেছেন,  সেখানেই রেখেছেন তাঁর সৃজনশীলতা ও নান্দনিকতার স্বাক্ষর। শিক্ষাক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর মেধা, দক্ষতা, মমতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে তিনি গড়ে তুলছেন তাঁর পবিত্র শিক্ষার্থীদের, যা তাদের সুন্দর মানসিকতার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক হবে।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারি এই শিক্ষিকা কুতুবদিয়ার ঐতিহ্যবাহী  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুতুবদিয়া মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো: আক্কাস উদ্দিন ও মরহুমা তাহমিনা খানম চৌধুরী এর প্রথমা কন্যা এবং স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ফতেহ আলী সিকদার বাড়ী এলাকার মরহুম মাস্টার ছালেহ আহমদ’র পুত্রবধূ।কুতুবদিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক মো. শওকতুল ইসলামের সহধর্মিণী। এছাড়া ও তিনি করোনা দূর্যোগে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অনলাইন পাঠদান করে দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন এবং এর স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে নানা সম্মাননাও পেয়েছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |