বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

‘কী চাইছিলাম, আর কী হলো!

‘কী চাইছিলাম, আর কী হলো!

ঝিকরগাছা (যশোর) সংবাদদাতা :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার দেউলী গ্রামের কৃষক নওশের আলীর সন্তান ইমতিয়াজ আহমেদ জাবির। বাইশ বছর বয়সী ইমতিয়াজকে নওশের আলী পরিশ্রমের টাকায় পড়াতেন বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু কোটা আন্দোলনে ইমতিয়াজ চলে যান না ফেরার দেশে। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ কৃষক নওশের আলী। সন্তানের কথা ভেবে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নওশের, বলছেন- ‘আল্লাহ, কী চাইছিলাম, আর কী হলো! এর বিচার তুমি ছাড়া কার কাছে চাইব?’

গত ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ডালিম। পরে বন্ধুদের সহায়তায় ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ওইদিনই জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২২ জুলাই ইমতিয়াজকে সেখান থেকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)। বুধবার ইন্টারনেট আংশিক খুলে দেওয়ার পর সে গুরুত্বর আহত হওয়ার খবর দেউলী গ্রামে পরিবারে আসে। প্রায় সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ডালিম। ঢামেক আইসিইউতে শুক্রবার (২৬ জুলাই) ভোররাত ৪টার মারা যান তিনি। ইমতিয়াজ আহমেদ জাবিরের চাচাতো ভাই ইমন হাসপাতাল থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। শনিবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে। সরেজমিনে গেলে নিহত ইমতিয়াজ আহমেদ জাবিরের খালু ইসমাইল ইত্তেফাককে জানান, পিঠে ও পায়ুপথের উপরিভাগে দুটো গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জাবিরের।

এদিকে একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় ইমতিয়াজ আহমেদ জাবিরের বাবা নওশের আলী। বুকের ধনকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনা করতে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। ইচ্ছে ছিল দেশের বাহিরে পড়ানোর। কিন্তু বাবার সেই স্বপ্ন এখন নিথর দেহ। সন্তান ইমতিয়াজের হত্যার বিচার চেয়ে চেয়ে বারবার মূর্ছা যান তিনি।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2025 Protidiner Kagoj |