নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া, এই দ্বীপে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, নদীভাঙন, কর্মসংস্থানের অভাব আর অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত। এ অঞ্চলের মানুষ বহুদিন ধরেই উন্নয়ন ও সৎ নেতৃত্বের তৃষ্ণায় কাতর। জাতীয় রাজনীতির বড় বড় খেলোয়াড়রা এ দ্বীপকে ভোটের সময়ে গুরুত্ব দিলেও উন্নয়ন থমকে আছে একই জায়গায়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। হাতিয়ার রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম যাকে স্থানীয়রা এখন বিশ্বস্ত নেতা এবং জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাতিয়ার রাজনীতি চলছে ক্ষমতাধর বংশ আর দলীয় প্রভাবের খপ্পরে। সাধারণ মানুষ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি শুনেছে অনেক, কিন্তু বাস্তবে পরিবর্তনের ছোঁয়া পায়নি। শিক্ষিত, আন্দোলন-সংগ্রামে অভিজ্ঞ এই নেতা হয়ে উঠেছেন হাতিয়ার নতুন ভরসা।
দীর্ঘদিনের লুটপাট, দলীয় দখল আর বংশীয় প্রভাবের রাজনীতিতে ক্লান্ত হাতিয়ার মানুষ এখন নতুন বিকল্প খুঁজছে। শিক্ষা, সততা, সংগ্রামী জীবন আর উন্নয়নের স্বপ্ন হাতিয়াকে নতুন যুগের পথে নিয়ে যেতে পারে এমনটাই বলছে হাতিয়ার সাধারণ মানুষ।
হাতিয়া সবসময় নোয়াখালীর রাজনীতিতে কৌশলগত এলাকা। এই আসন থেকে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি লড়াই নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বীপবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। নদীভাঙনে ঘর হারানো মানুষ, শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত তরুণরা, এবং জীবিকার অনিশ্চয়তায় জেলেরা সবাই চায় একজন দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব, যিনি শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব উন্নয়ন নিশ্চিত করবেন।
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা শামীম শুধু ভালো সময়ে নয়, বরং দুঃসময়ের সৈনিক হিসেবেই বেশি পরিচিত। দমনপীড়নের সময় মাঠে থাকা, নেতাকর্মীদের পাশে থাকা, এবং দলকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সুসংগঠিত করার কৃতিত্ব তার সাথেই জড়িয়ে আছে।
মাহবুবের রহমান শামীমের বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড সুত্রে জানা যায়, শামীম নদীভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, জেলেদের জন্য আধুনিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, হাসপাতাল, কলেজ ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট স্থাপন, দ্বীপকে সড়ক ও নৌ যোগাযোগের আধুনিক ব্যবস্থার আওতায় আনা, পর্যটন শিল্প বিকাশ করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন।
হাতিয়া পৌরসভার রবিন নামের তরুণ একজন ভোটার প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, আমরা চাই একজন এমপি, যিনি আমাদের হাতিয়ার উন্নয়ন করার মানসিকতা রয়েছে। যেটা বর্তমানে শামীম ভাইয়ের প্রতিশ্রুতিতে সেই ভরসা পাচ্ছি।
কালিরচরের নাজিম মাঝি (জেলে) প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, আমাদের জীবন সমুদ্রনির্ভর। যদি সত্যিই প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প হয়, আমাদের ভাগ্য বদলাবে। কত এমপি এলো গেলো কেউ ভালো কিছু করে নি। এখন শামীম ভাই এমপি হলে হাতিয়ার উন্নয়ন হবে এটা আশা করা যায়।
রহমত নামের একজন চায়ের দোকানদার প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রভাব কাজে লাগাতে পারলে শামীম ভাই হাতিয়াকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবেন।
বুড়িরচর ইউনিয়নের তরুণ এক ছাত্রদল নেতা প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, আমরা হাতিয়া দ্বীপের উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবর্তন চাই এবং হাতিয়া বদলাতেও পারে, শামীম ভাইয়ের যুক্তি ও কথায় অন্তত ভরসা পাচ্ছি, হাতিয়ায় এবার কিছু একটা হবে।
সোনাদিয়া ইউনিয়নের বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, যখন বিএনপির দুঃসময় ছিলো, গ্রেপ্তার, মামলা হামলা হচ্ছিলো, তখন মাঠে ছিলেন শামীম ভাই। তাই আমরা তাকে শুধু নেতা নয়, অভিভাবক মনে করি।
পৌরসভার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠা সহজ নয়। শামীম সেটা করতে পেরেছেন। কিন্তু ভোটের দিন পর্যন্ত তিনি এই আস্থা ধরে রাখতে পারেন কিনা, সেটিই দেখার বিষয়।
হাতিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সুমন তালুকদার প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, হাতিয়ার রাজনীতিতে এবার শুধু দলীয় প্রতীক নয়, প্রার্থীর ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা ও উন্নয়ন পরিকল্পনাই নির্ধারণ করবে বিজয়ী কে হবেন। সেই প্রেক্ষাপটে মাহবুবের রহমান শামীম ইতোমধ্যেই দ্বীপবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
হাতিয়া উপজেলা ছাত্র দলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক রিয়াজ মাহমুদ প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, জনগণ এবার হাতিয়ার উন্নয়নকেই প্রাধান্য দেবে। যোগ্য প্রার্থীকে অবশ্যই হাতিয়ার মানুষ খুঁজে নিবে আর সেই জায়গায় মাহবুবের রহমান শামীম এগিয়ে আছেন।
এই বিষয়ে জানতে মাহবুবের রহমান শামীম প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, হাতিয়াকে আর অবহেলার দ্বীপ হতে দেব না। আমি চাই উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও মানুষের আস্থা ফিরে আসুক।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শামীমের বড় শক্তি হলো তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও বিশ্বস্ত ভাবমূর্তি। তবে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বীরা সক্রিয়। তাকে মাঠে থেকে জনগণের সঙ্গে নিয়মিত সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :