নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিএনপির রাজনীতিতে আবারও শুরু হয়েছে হাইব্রিড বিতর্ক। হাইব্রিড ঠেকাতে আয়োজন করা হয় উপজেলা বিএনপির এক বিশেষ সভা। অথচ সেই সভাতেই উপস্থিত ছিলেন অতীতের আওয়ামী লীগপন্থী একাধিক নেতা ও কর্মী! এই নিয়ে নেতা কর্মীদের মাঝে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে হাতিয়ার সদর ওছখালী চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এই মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, হাতিয়া তমরুদ্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলাউদ্দিন বাবুর ভাই আফসার উদ্দিন জিয়া, আওয়ামী লীগের আমলে হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর হাত ধরে এলাকায় লুটপাট, অগ্নি সংযোগ, হামলা মামলা, দখলবাজিসহ নানান অপকর্মে জড়িত ছিলেন।
সাম্প্রতি আফসার উদ্দিন জিয়াকে ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা পুলিশ, গ্রেপ্তার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী রাজনীতির ঘনিষ্ঠ কয়েকজনসহ উপস্থিত ছিলেন। এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা।
হাতিয়া উপজেলা বিএনপির এক নেতা প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, যারা আওয়ামী লীগের দালালি করেছে, এখন তারাই বিএনপির সভায় সামনের সারিতে। এটা দলে অনুপ্রবেশ ছাড়া আর কিছু নয়। হাইব্রিড ঠেকানোর নামে নাটক হচ্ছে।"
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবর আজম প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, আমরা ত্যাগ করেছি, মামলা খেয়েছি, দুঃসময়ে দলের পতাকা উঁচু রেখেছি। অথচ আজ সুবিধাবাদীরা আবার এসে দলে আধিপত্য করছে। এভাবে চলতে থাকলে তৃণমূলের কর্মীরা ভেঙে পড়বে।
বিএনপির তরুণ এক কর্মী প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, দুঃসময়ের সৈনিকদের কোনো কদর নেই। সুবিধাবাদীরা আজ আবার বিএনপির সভায় এসে দাপট দেখাচ্ছে। এটা দলের জন্য ভয়ংকর সংকেত।
উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, দলকে দুর্দিন থেকে রক্ষা করতে হলে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীদের কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘেঁষা সুবিধাবাদীরা দলে ঢুকতে পারবে না
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সজাগ থাকতে হবে। বিএনপির রাজনীতিকে আবারো কলুষিত হতে দেওয়া যাবে না।
এই বিষয়ে আফসার উদ্দিন জিয়াকে মুঠোফোনে বার বার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, বিএনপির ভেতরে হাইব্রিড সমস্যা এখন বড় হুমকি। তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগপন্থী হাইব্রিডদের স্থান দিলে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়বে। এতে দলে বিভাজন গভীরতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :