দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা গোলচত্বর এলাকা সপ্তাহ তিনেক ধরে আবারও অন্ধকারে ডুবে আছে। বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ পুড়ে যাওয়ায় গোলচত্বর থেকে ভাঙ্গা টোল প্লাজা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকার সড়কবাতি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে স্থানীয়রা চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সমস্যার সমাধানে তারা কাজ করছেন, তবে স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতাকে এই সমস্যার জন্য দায়ী করছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাবস্টেশনের যন্ত্রাংশ পুড়ে যাওয়ার পর বর্তমানে একটি জেনারেটর দিয়ে সড়কবাতিগুলো চালানো হচ্ছে।
ইন্টারচেঞ্জ সাব-স্টেশনের নৈশপ্রহরী সিরাজ খান জানান, ২০ থেকে ২৫ দিন আগে স্টেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম পুড়ে যায়। জেনারেটর দিয়ে প্রতিদিন রাতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা লাইট জ্বালানো হয়।
কোর্ট পাড়ের বাসিন্দা সাইদুল শেখ বলেন, পুরো এলাকায় সন্ধ্যার পর রাতভর বিদ্যুতের আলো জ্বলে না। ইন্টারচেঞ্জ এলাকার নৈশপ্রহরী আক্কাছ মোল্লা জানান, লাইট সবসময় না জ্বলায় প্রায়ই চুরি-ছিনতাইয়ের কথা শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, একবার সমাধান করার কিছুদিন পর আবার একই সমস্যা দেখা দেয় এবং বৈদ্যুতিক তার, লাইট ও অন্যান্য সরঞ্জাম চুরির ঘটনা ঘটে।
সমস্যার জন্য বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ও সড়ক বিভাগ একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
ওজোপাডিকোর বক্তব্য ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ভাঙ্গা আবাসিক প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, গত কয়েক বছরে একাধিকবার বিদ্যুতের বিল সময়মতো পরিশোধ না হওয়ায় ইন্টারচেঞ্জ এরিয়ার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বর্তমানেও দুই থেকে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।
সওজ এর বক্তব্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এমএম হানিফ জানান, বিদ্যুতের তার ও গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম চুরি হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ সময়ে সড়কবাতি জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি দ্রুতই সাবস্টেশনের গোলযোগ সমাধানের আশ্বাস দেন এবং এ জন্য সংশ্লিষ্ট কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলে জানান।
অন্ধকারের সুযোগে চুরি-ছিনতাই বৃদ্ধির ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন।
তিনি বলেন, অপরাধ প্রতিরোধে ইন্টারচেঞ্জ এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ওসি জানান, ইন্টারচেঞ্জ এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে রাতে পুলিশের টহল আরও জোরদার করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :