অন্ধ্র প্রদেশের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যায়

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:২১ এএম

সন্ধ্যার মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়া উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’

অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার মধ্যে কাকিনাড়া উপকূলে- মাচিলিপাটনম ও কালিঙ্গাপটনমের মধ্যবর্তী অঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এম মোহাপাত্র এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে অন্ধ্র প্রদেশ, এরপর উড়িষ্যা ও তারপর ছত্তিশগড়। আগামী ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অন্ধ্র প্রদেশ, উড়িষ্যা, ছত্তিশগড় ও তামিলনাড়ুতে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও জানান, অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানার সময় ‘মন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, যার সর্বোচ্চ বেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। উপকূলে আঘাত হানার পর ঝড়টি কিছুটা দুর্বল হয়ে উড়িষ্যার দিকে আগাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি চেন্নাই থেকে ৪২০ কিলোমিটার, বিশাখাপত্তনম থেকে ৫০০ কিলোমিটার ও কাকিনাড়া থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে উপকূলীয় অন্ধ্র প্রদেশে ভারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার প্রভাব দেখা দিয়েছে। পুরো উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে জারি করা হয়েছে উচ্চ সতর্কতা।

অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্য সচিবালয়ের রিয়েল টাইম গভর্ন্যান্স সোসাইটি সেন্টার থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সম্ভাব্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোনে মুখ্যমন্ত্রী নাইডুর সঙ্গে কথা বলেছেন ও রাজ্যকে সবধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

সরকার এরই মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু ও ছত্তিশগড়- এই পাঁচ রাজ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ২২টি দল মোতায়েন করেছে।

অন্ধ্র প্রদেশের প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি রাজ্যের ১ হাজার ৪১৯টি গ্রাম ও ৪৪টি শহরে প্রভাব ফেলতে পারে। মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ও উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।

সমুদ্র অশান্ত হয়ে উঠেছে ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। জেলেদের সমুদ্রে না যেতে কড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য সব সমুদ্রসৈকত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে, উড়িষ্যা সরকারও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের আটটি জেলায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে ও সেসব এলাকায় হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পরিবর্তনের আশঙ্কায় রাজ্যের সব জেলাকেই সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

Link copied!