শাহিনুল ইসলাম কুড়িগ্রাম থেকে ফিরে: কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানার এসআই জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ, গোপন বৈঠক এবং বিভিন্ন সময়ে তাদের সঙ্গে ফোনালাপের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার মোবাইল ফোনালাপের কললিস্ট ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসআই জাহেদুল ইসলাম প্রায়ই উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতা নজরুল ইসলামসহ দলের শতাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা বলেন। এসব আলাপচারিতা ও গোপন যোগাযোগের উদ্দেশ্য নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ভুরুঙ্গামারীতে কর্মরত থেকে তিনি গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে এসআই জাহেদুল ইসলামসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইজিপি কমপ্লেন সেলসহ ৭টি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সকল অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে।
ভুরুঙ্গামারীর নাগরিক সমাজের অভিযোগ, দায়িত্বে থাকাকালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করে বরং তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং গ্রেফতারের গোপন তথ্য আগাম ফাঁস করার মতো গুরুতর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি গ্রেপ্তার এড়াতে কিছু নেতাকর্মীর কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নেয়ার কথাও এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
ভুরুঙ্গামারী পৌরসভার এক নারী নাম প্রকাশে অনুচ্ছেদ অভিযোগ করে বলেন, এসআই জাহেদুল তার বাড়িতে গিয়ে স্বামীকে খুঁজতে আসেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার স্বামী নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মী। এরপর ওই নারীর সঙ্গে ৪৫ হাজার টাকায় রফাদফা হয় এমন একটি অডিও ক্লিপ সাংবাদিকের কাছে তুলে দেন, যা প্রকাশ হলে বিষয়টি আরও আলোচনার জন্ম দেয়।
এ ধরনের আচরণ পুলিশের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের অভিযোগ, পুলিশি দায়িত্বে থেকে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, নিরপেক্ষতা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ওপর বড় প্রশ্ন তোলে।
এ বিষয়ে এসআই জাহেদুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন আচরণ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। সচেতন মহল মনে করছে, এসব ফোনালাপ ও গোপন যোগাযোগের রহস্য উদ্ঘাটন হলে ভুরুঙ্গামারীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রশাসনিক অঙ্গনের একাধিক অজানা দিক প্রকাশ পেতে পারে।
ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি মোহাম্মদ আজিম উদ্দিনের বক্তব্য জানতে সরকারি নম্বরে বহুবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আপনার মতামত লিখুন :