শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

আপডেট
সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করায় পবিপ্রবি ভিসি-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা

সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করায় পবিপ্রবি ভিসি-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা

আবু হাসনাত তুহিন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জনৈক সাব্বির হোসেন, সুমাইয়া ইরা ও তানভীর স্বাধীন রাব্বি নামে ভুক্তভোগী মামলা করলে আদালতের বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
মামলার বিবরণ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৬ নভেম্বর পবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. কামরুল ইসলাম ৪৯টি পদে জনবল চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পবিপ্রবি প্রশাসন যে শর্ত দিয়েছে, তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসির) নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও জানা যায়, নিয়োগ বাণিজ্য হাসিল করতেই বিজ্ঞপ্তিতে মনগড়া শর্ত আরোপ করেছেন কর্তৃপক্ষ। তা ছাড়া যেসব পদে জনবল চাওয়া হয়েছে তার অধিকাংশতে ইউজিসির অনুমোদন নেই এবং অর্গানোগ্রামেও এসব পদ নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে পবিপ্রবিতে প্রো-ভিসির পদে জনবল নেই। অথচ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রো-ভিসির পিওটু চাওয়া হয়েছে। অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সেকশন অফিসারের ৩০টি পদে জনবল থাকলেও এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩টি সেকশন অফিসার চাওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ১১টি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেন পবিপ্রবির তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুদ্দীন। ওই বছরের ২৬ মে রিজেন্ট বোর্ডের ৩২তম সভার সিদ্ধান্তে ৭ ব্যক্তিকে স্থায়ীভাবে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। একই সময়ে আরও ১৫ জনকে অস্থায়ীভাবে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। ইউজিসির অনুমোদন না নিয়েই এ কাজ করা হয়।
পরবর্তীতে ড. মোহাম্মদ শামসুদ্দীনের তদ্বিরে অস্থায়ী নিয়োগ পাওয়া মো. রাজিবের চাকরি স্থায়ী হয় এবং দ্বিতীয় ধাপে ভিসি ড. মো. হারুন অর রশিদের তদবিরে সেকশন অফিসার মশিউরের পদটিকে অনুমোদন দেয় ইউজিসি। তৃতীয় ধাপে ২০১৪ সালে নিয়োগের বাকি ১৩ জনের মধ্যে ৫ জনকে কৃত্রিম পদে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি দেন ভিসি হারুন অর রশিদ। বাকি ৮ সেকশন অফিসারকে এখন কৃত্রিম পদে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতির চেষ্টা করছেন ভিসি স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. কামরুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, যেখানে পবিপ্রবির প্রশাসন বেতন-ভাতার দাবিতে প্রায় চারশ কর্মচারীর আন্দোলন-সংগ্রাম চলমান রয়েছে। সেখানে অবৈধ নিয়োগ দিয়ে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে কেন? এতে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ সংকটের মুখে পড়বে। চলমান বৈশ্বিক মন্দায় যেখানে সরকার মেগা প্রকল্প গুটিয়ে নিচ্ছে, সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন নীতিমালা ভঙ্গ করে ব্যয় বাড়াচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. কামরুল ইসলাম বলেন, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে রিজেন্ট বোর্ডে যেভাবে পাস করা সেভাবেই বিজ্ঞাপ্তি দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে কিছু সুবিধা প্রত্যাশীরা নিয়োগ নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আসলে এর কোনো ভিত্তি নেই।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |